আমাদের রক্তকোষের আয়রনসমৃদ্ধ প্রোটিনকেই হিমোগ্লোবিন বলে। এই প্রোটিন আমাদের শরীরে অক্সিজেন পরিবহণে সাহায্য করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ অতিরিক্ত মাত্রায় কমে গেলে রোগী প্যারালাইজ হয়ে যেতে পারে এমনকি মারাও যেতে পারে।
হিমোগ্লোবিনের প্রধান কাজ হচ্ছে, ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে অক্সিজেনকে শরীরের বিভিন্ন কোষে ছড়িয়ে দেওয়া। এর ফলে আমাদের দেহের জীবিত কোষগুলো ভালোভাবে কাজ করতে পারে। এছাড়াও দেহের কোষ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে বের করে দেওয়ার কাজটাও এই হিমোগ্লোবিনই করে থাকে।
সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক থাকা প্রয়োজন। আর কিছু খাবার গ্রহণের মাধ্যমে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখা সম্ভব। খাবারগুলো হলো—
১. আয়রনসমৃদ্ধ খাবার:
শরীরে লৌহের ঘাটতি হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে লৌহ পদার্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে কচু শাক, কচির লতি, কলিজা, লাল মাংস, চিংড়ি, পালংশাক, আমন্ড, খেজুর, শতমূলী ইত্যাদি অন্যতম। এসব খাবারের মধ্যে বেশিরভাগই সহজলভ্য এবং স্বল্পমূল্যের।
২. ভিটামিন সি:
শরীরে ভিটামিন-সি এর অভাব দেখা দিলে হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে। আর ভিটামিন সি ছাড়া দেহে আয়রন পুরোপুরিভাবে শোষণ হয় না। পেঁপে, কমলা, মালটা, লেবু, স্ট্রবেরি, গোলমরিচ, ব্রোকলি, আঙ্গুর, টমেটো,আমড়া, আমলকি, পেয়ারা ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য এবং রক্তদাতা খুঁজে নিতে রেজিষ্ট্রেশন করে নিন । রেজিষ্ট্রেশন লিংকঃ
https://roktobondhon.com/registration
৩. ফলিক এসিড:
ফলিক এসিড হচ্ছে একপ্রকার ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। লাল রক্তকণিকা তৈরিতে এই উপাদানটি অপরিহার্য। সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, কলিজা, ভাত, শিমের বিচি, বাদাম, কলা, ব্রোকলিতে প্রচুর ফলিক এসিড পাওয়া যায়। প্রতিদিন আমাদের খাবারে সামান্য হলেও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত।
৪. বিটরুট:
হিমোগ্লোবিন বাড়াতে ডাক্তারগণ বিটের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিটরুটে প্রচুর আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ফাইবার ও পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ। বিশেষ করে গর্ভবতী মেয়েদের বিটরুট খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য এই খাবারের জুড়ি মেলা ভার।
৫. আপেল:
আপনি চাইলে দিনে একটি করে আপেল খেয়ে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে পারেন। বলা হয়ে থাকে, প্রতিদিন একটি আপেল খেলে তার ডাক্তারের প্রয়োজন হয় না। আয়রনের উৎস আপেলে আরো নানা পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন খোসাসহ একটি আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন। চাইলে সমানুপাতিক হারে আপেল ও বিটরুটের রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
৬. ডালিম:
আয়রন, ক্যালসিয়াম, শর্করা ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার ডালিম। ডালিম রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে দেহে রক্ত চলাচল সচল ও স্বাভাবিক রাখে। প্রতিদিন মাঝারি আকৃতির একটি ডালিম/বেদানা খাওয়ার চেষ্টা করুন। অথবা এক গ্লাস ডালিমের জুস পান করার চেষ্টা করুন।
এছাড়াও ডিম, দুধ,ভসামুদ্রিক মাছ রক্তে আয়রণ ও প্রোটিন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-Rumel Rahman
Roktobondhon.com