হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচাতে পারে যে ৬টি খাদ্য।

গ্রীষ্মকালে এক আতংকের নাম হিট স্ট্রোক। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যদি কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির বেশি হয়ে যায় তাহলে মানুষের শরীরে রক্তচাপ কমে যায়। যার কারণে অচেতন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই সমস্যাটিকে বলা হয় ‘হিট স্ট্রোক’। মূলত গরমের প্রভাবে মানুষ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে পানির ঘাটতি হলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হিট স্ট্রোকের আগে শরীরিক অস্বস্তিবোধ হয়, বারবার তৃষ্ণা পায়, মুখ শুকিয়ে যায় এবং মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

যদি আপনার মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে আপনাকে এখনই সচেতন হতে হবে। কেননা, নিয়মিত এরকম চলতে থাকলে জ্ঞান হারানো, বুক ধড়ফড় করা, নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা এমনকি হিট স্ট্রোকের মতো বিপত্তিতেও পড়তে হতে পারে।

গরমে শরীরে পানির ঘাটতি থেকে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দেয়। সেই সাথে ঘামের কারণে শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের পরিমাণও কমে যায়। এর ফলে মানুষ পানিশূন্যতায় এবং এরপর হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।

গ্রীষ্মকালে ডায়েট লিস্টে এমন কিছু খাবারকে প্রাধান্য দেন যা শরীরে পানির স্বাভাবিক পরিমাণ বজায় রাখতে পারে। পাশাপাশি সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রাও বাড়াতে সহায়তা করে। আজ এমনই ৬টি খাবারের কথা জানাতে চাই আপনাদের।

১. ডাবঃ

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে খাদ্য তালিকায় ডাবের পানি রাখতে পারেন। ডাবের পানি শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। প্রচন্ড গরমে ডাবের পানি, পানি শূন্যতা দূর করার পাশাপাশি শরীর অনেকটাই সতেজ রাখতে সহায়তা করে ।

২. আমঃ

শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন পদার্থগুলো বের করে দেয় গ্রীষ্মের ফল আম। গরমের দিনে এই ফল খেলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া কাঁচা আম শরীরে রোদের প্রভাব কমাতেও বেশ ভালো ভূমিকা রাখে।

৩. লাউঃ

শরীর ঠান্ডা রাখতে বা শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় লাউ রাখতে পারেন। এর সাথে অঙ্কুরিত মুগডাল ভাজাও খেতে পারেন। কারণ, এই দুটি খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম। নিয়মিত এই খাবার খেলে শরীরে তাপমাত্রা কমে যায়, পেট ঠান্ডা থাকে এবং শরীরে সোডিয়াম আর পটাশিয়ামের সঠিক মাত্রা বজায় থাকে।

৪. টক দইঃ

শুধু হিট স্ট্রোকেই নয়, যে কোন ক্ষেত্রে ডায়েট লিস্টে টক দই রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, টক দইয়ের সব পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। টক দই শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার তৈরি করে এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দেয়। তাই নিয়মিত টক দই খাওয়ারও অভ্যাস করতে পারেন।

৫. লেবুর শরবতঃ

লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন- সি। আর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী। লেবুর শরবত পানি শূন্যতা দূর করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে। তবে পারতপক্ষে লেবুর শরবতে চিনি খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরী।

৬. তরমুজঃ

পানির পাশাপাশি তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-এ। এছাড়াও সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর এই ফলটি। এছাড়াও তরমুজ মনকে শান্ত রাখে, প্রবল গরমে দেয় ঠাণ্ডার প্রভাব। এজন্য হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ খেতেই পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *