জরায়ু ক্যান্সার, বছরে প্রাণ ঝরায় ৩ লক্ষ নারীর

জরায়ু ক্যান্সার:

পূর্বের পোস্টে আপনাদের স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। স্তন ক্যান্সার বর্তমান সময়ে মেয়েদের জন্য আতঙ্কের এক নাম। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে এই স্তন ক্যান্সারের প্রকোপ ভয়াবহ হারে বেড়ে চলেছে। তবে তার থেকেও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, স্তন ক্যান্সারের থেকেও মারাত্মক ও ভয়ঙ্কর আরেক ক্যান্সার নিঃশব্দে মৃত্যুর থাবা বসাচ্ছে নারীদের দেহে। এই ভয়ঙ্কর ক্যান্সারটি হচ্ছে জরায়ু ক্যান্সার।
জরায়ু ক্যান্সারকে বলা হয় সাইলেন্ট কিলার। কারণ অধিকাংশ নারীই এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো বুঝতে পারে না বা লক্ষণ দেখা দিলেও বিশেষ কোনো গুরুত্ব দেয় না। যার কারণ হচ্ছে, জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণগুলো কি সেই সম্পর্কে এদেশের ৯০% এর অধিক নারী এবং পুরুষই অজ্ঞ।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে হাজার হাজার নারী এই প্রাণঘাতী ক্যান্সারে আক্রান্ত। এবং প্রতিদিন অনেক নারী এই ক্যান্সারের কারণে ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে। মূলত লজ্জায় আর সচেতনতার অভাবে অধিকাংশ নারীরা জরায়ু ক্যান্সারের পরীক্ষা করতে চায় না। জরায়ুতে কোনো সমস্যা হলে ঠিক হয়ে যাবে, বা কিভাবে বলবে এমনটা ভেবেই দেরি করে ফেলে। যখন সমস্যা বেড়ে যায় বা সহ্য করতে পারে না তখন তারা ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আর কিছুই করার থাকে না।
অনেকেই মনে করে প্রাপ্ত বয়স্কা হওয়ার পরে নারীদের জরায়ু ক্যান্সার হয়। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আর এই ধারণাই মূলত নারীদের ডাক্তারের কাছে যাওয়া থেকে বিরত রেখে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। যে কোনো বয়সের নারীর জরায়ু ক্যান্সার হতে পারে। তবে গবেষণার মাধ্যমে জানা যায় ৫০ বা তার অধিক বয়সী নারীরা জরায়ু ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। জরায়ু ক্যান্সার থেকে নিজেকে সুস্থ রাখতে ৩০ বছর বয়স থেকে জরায়ুমুখ পরীক্ষা করা জরুরী।
২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে বিশ্বে ৫,০০,০০০ এর অধিক নারী জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আর প্রতি ২ মিনিটে ১ জন নারী জরায়ু ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে। তাহলে বর্তমানে এই সংখ্যাটি কতটা বৃদ্ধি পেতে পারে তা সহজেই অনুধাবণ করা যায়।
জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীরা প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা না নেওয়ার ফলে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৫০% কমে যায়। আর যে সকল নারী প্রাথমিক অবস্থাতেই ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয় এবং নিয়মিত জরায়ুমুখ পরীক্ষা করায়, তাদের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯৫%।
জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে প্রথমিক পর্যায়েই ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। আর প্রাথমিক পর্যায়ে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে হলে সর্বপ্রথম জানতে হবে জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো কি। যদি কোনো নারীর মাঝে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তাহলে ক্যান্সার ও জরায়ু পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে।

জরায়ু ক্যান্সারের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ:

জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো-

১. হঠাৎ ক্ষুধা কমে যাওয়া বা ক্ষুধা না লাগা,

২. সবসময় বমি বমি অনুভব করা বা রারবার বমি হওয়া,

৩. পেটে অতিরিক্ত ব্যথা হওয়া বা পেট ফুলে থাকা,

৪. যৌনাঙ্গের চারপাশে চাপ বোধ হওয়া এবং ঘনঘন মূত্রচাপ বা মূত্রত্যাগ করা,

৫. হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে ওজন কমে যাওয়া, বা অতিরিক্ত পরিমাণে ওজন বেড়ে যাওয়া,

৬. অভ্যস্ত হওয়ার পরেও যৌনমিলনের সময় যোনিতে ব্যথা অনুভব করা,

৭. নারীদের মনোপোজ হওয়ার সময় পার হওয়ার পরেও রক্তক্ষরণ হওয়া,

৮. গ্যাস, বদহজম, হালকা খাবারেও পেট ভরে ভরে যাওয়া অনুভব করা, পেটে অস্বস্তি অনুভব করা, কোষ্টকাঠিন্য ইত্যাদি। পেটের কোনো সমস্যা খুব বেশি অনুভব হলে সেটাও জরায়ু কান্সারের কারণে হতে পারে।

৯. অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা,

১০. যৌন সঙ্গমের পরে রক্তপাত হওয়া,

১১. দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে রক্তপাত হওয়া,

১২. ভারি বা স্বাভাবিক স্রাব,

১৩. দুর্গন্ধ জনিত স্রাব,

১৪. ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া এবং প্রস্রাবের সময় ব্যথা হওয়া,

১৫. পেলভিক পরীক্ষার পরে রক্তপাত হওয়া।

১৬. পেলভিকের ব্যথা অনুভব হওয়া যা মাসিক চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

প্রতিরোধের উপায়ঃ

বর্তমান বাজারে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পরিষ্কার রাখার জন্য ভেজা টিস্যু পেপার, সুগন্ধি সাবান, জেলসহ নানা ধরণের জিনিস পাওয়া যায় অনেকেই এইসব জিনিস ব্যবহার করে থাকে। তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ এই সকল পরিষ্কারক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ এই সকল পন্য উপকারের থেকে বেশি ক্ষতি করে থাকে। এমনকি স্কিন এলার্জি, স্কিন ইনফেকশনের পাশাপাশি স্কিন ক্যান্সার পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে।
ঠিক তেমনই যৌনাঙ্গ পরিষ্কারক হিসেবেও নানা ধরণের জিনিস বাজারে পাওয়া যায়। এসব পরিষ্কারক ব্যবহারকারী ১৪০০ নারীকে নিয়ে কানাডায় একটি গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে এসব পন্য ব্যবহারের ফলে যৌনাঙ্গ এবং মূত্রনালীতে সংক্রমণের ঝুঁকি অন্য নারীদের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ সকল পরিষ্কারক দ্রব্যে থাকা কেমিক্যালের মাধ্যমে অনেক সময় যৌনাঙ্গে ইনফেকশন, ফাঙ্গাস, চুলকানি বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে৷ এছাড়াও এসব কেমিক্যালের কারণে বা ইনফেকশন ও ফাঙ্গাসের প্রভাবে নারীদের সন্তান ধারণ বাঁধাগ্রস্থ হতে পারে।
প্রতিনিয়ত যৌনাঙ্গের যত্ন না নিলে বা যৌনাঙ্গ পরিষ্কার না করলেও নারীরা জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। তাই জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে যৌনাঙ্গের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ পরিচর্যা করতে হব।
জেনে নিন যৌনাঙ্গের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কি কি করতে হবে নারীদের।

★ কুসুম গরম পানিঃ
যোনি বা লিঙ্গে শুধু কুসুম গরম পানি ব্যবহার করাই উত্তম ও যথেষ্ট। হালকা গরম পানির সাথে লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ প্রয়োজনে গোপনাঙ্গের আশেপাশে সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সাবান ব্যবহারের পরে খুব ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়ার বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

★ সুতির আন্ডারওয়্যারঃ
নারী-পুরুষ উভয়েরই সুতি কাপড়ের আন্ডারওয়্যার পরিধান করা উচিত। সুতি কাপড় স্কিনের জন্য ভালো। সিন্থেটিক কাপড় থেকে স্কীনের নানা ধরণের সমস্যা হতে পারে। যার মধ্যে এলার্জি, র‍্যাশ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বর্তমান যুগে অনেক মেয়েরাই আকর্ষণীয়তার জন্য নানা ডিজাইনের লেস বা গার্মেন্টস কাপড়ের আন্ডারওয়্যার পরিধান করে থাকে। কিন্তু এই সকল কাপড় যৌনাঙ্গের জন্য মোটেও উপকারী নয়। আরেকটি বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরী। সেটি হচ্ছে অবশ্যই আন্ডারওয়্যার পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। নিয়মিত ধুয়ে ও ভালোভাবে শুকিয়ে আন্ডারোয়্যার পরিধান করতে হবে।

★ পরিচ্ছন্নতার উপকারঃ
যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখলে মিলনের সময় অস্বস্তিবোধ থেকে মুক্ত থাকা যায়। আর যৌনাঙ্গ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে যে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর মিলনের আনন্দ পাওয়া যায় এমনটা নয়। এর মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিকভাবেও মানুষ সুস্থবোধ করে। ৩-৫ সপ্তাহ পরপর পিউভিক হেয়ার কেটে/কামিয়ে নেওয়া জরুরী। এটি শারীরিকভাবে একজনকে পবিত্র করার পাশাপাশি মানুষকে জীবাণু থেকে সুরক্ষিত রাখে।

★ যৌনমিলনের আগে ও পরেঃ
যৌনমিলনের আগে নারী ও পুরুষ উভয়েরই যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করাটা খুবই জরুরী। না হলে যৌনাঙ্গের ময়লা এবং জীবাণু একজন থেকে অপরজনের দেহে প্রবেশ করে সংক্রামিত করবে। এর ফলে ইনফেকশন, সেখান থেকে টিউমার বা ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। তবে মিলনের ঠিক আগ মুহূর্তে না করে ঘন্টাখানের আগে পরিষ্কারের কাজটা করা উচিত। মিলনের আগ মুহূর্তে এটা করলে যৌনসুখ বা মিলনের ইচ্ছা কিছুটা কমে যেতে পারে। যৌনমিলনের পরে প্রস্রাব করে নেওয়াটা জরুরী। এতে অনেক জীবাণু বের হয়ে যায় এবং তলপেট চাপমুক্ত থাকে। আর একের একাধিকবার যৌন মিলন করলে একবার মিলনের পরে অবশ্যই ভালোভাবে যৌনাঙ্গ ধুয়ে পুনরায় যৌনমিলন করতে হবে।

★ নতুন আন্ডারওয়্যারঃ
নারী, পুরুষ কারোই অন্তর্বাস না ধুয়ে পরিধান করা উচিত নয়। না ধুয়ে আন্ডারওয়্যার ব্যবহার করলে এর মাধ্যমে যৌনাঙ্গে সংক্রমণ বা এলার্জি হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। আবার ভিজা আন্ডারওয়্যারও পরিধান করা উচিত না। এর মাধ্যমে যৌনাঙ্গে নানা রকম ফাঙ্গাস সৃষ্টি হতে পারে এবং যৌনাঙ্গের আশেপাশে র‍্যাশ হতে পারে। সকল বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশনা প্রযোজ্য।

★ অতিরিক্ত টাইট অন্তর্বাস পরিধান না করাঃ
টাইট বা অতিরিক্ত টাইট অন্তর্বাস পরিধান করা কারও জন্যই উচিত নয়। কারণ, টাইট অন্তর্বাস পরিধান করলে গোপনাঙ্গে এবং এর আশেপাশে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। আবার এর কারণে বাতাস আসা যাওয়ায় বিঘ্ন ঘটার কারণে যৌনাঙ্গে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। আর দুর্গন্ধের থেকেই জীবাণু ও নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়।

★ দুর্গন্ধ ও সংক্রমণ রোধ করতেঃ
যৌনাঙ্গে পানি ব্যবহার করার পরে অবশ্যই ভিজে থাকা স্থান পরিষ্কার টাওয়েল দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। যৌনাঙ্গ ভিজা থাকলে সেখানে দুর্গন্ধ হতে পারে এবং মূত্রনালীতে ফাঙ্গাস জন্মাতে পারে।

★ মেয়েদের পিরিয়ডের সময়ঃ
পিরিয়ডের সময়টাতে মেয়েদের যৌনাঙ্গ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। এর পাশাপাশি নিয়মিত প্যাড বদলানো উচিত। একটি প্যাড ৫-৬ ঘন্টার বেশি ব্যবহার করা কখনোই উচিত নয়। ৬ ঘন্টার বেশি প্যাড ব্যবহার করলে সেই প্যাডের জেল ও পিরিয়ডের রক্ত থেকে ফাঙ্গাস ও জীবাণু সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে ভালো হয় প্রতি ৩-৪ ঘন্টা পরপর প্যাড পরিবর্তন করা। স্যাঁতসেঁতে ও ভিজা প্যাড বা কাপড়ে সহজেই জীবাণু বাসা বাঁধে। আর এই জীবাণু থেকেই বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের মধে গবেষণায় দেখা যায় একটি প্যাড দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের ফলে জরায়ু ক্যান্সারে বা টিউমারে আক্রান্ত হয়েছে এমন নারীর সংখ্যা ৭৮ শতাংশেরও বেশি। ৬ ঘন্টার বেশি প্যাড ব্যবহার করাকে জরায়ু ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ্য করা হয়।

★ মেনোপজঃ
হরমোনের তারতম্যের কারণে অনেক নারীর মেনোপজের আগে বা পরে যোনিপথ কিছুটা শুষ্ক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অনেকেই বাজার থেকে ক্রিম, তেল বা জেল কিনে ব্যবহার করে। এসকল পন্য যোনির জন্য ক্ষতিকর বিধায় ডাক্তার এসকল পন্য ব্যবহার না করার জন্য নির্দেশ দিয়ে থাকে।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধযোগ্য টিকা পাওয়া যায়। মেয়েদের বয়স ১০ থেকে ১২ থাকাকালীন ৬ মাসের মধ্যে ৩টি ডোজের মাধ্যমে এই টিকা দেওয়া হয়। এই টিকা মূলত বিয়ের পূর্বে অথবা যৌনমিলনে সক্রিয় হওয়ার পূর্বে নেওয়া প্রয়োজন। এই টিকা ছাড়াও আরও কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। পদক্ষেপগুলো হলোঃ-

১. কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়ে পরামর্শ গ্রহণ করা,
২. জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে নারী-পুরুষ উভয়ের মাঝে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার বিষয়ে সচেতন করা,
৩. ১৮ থেকে ৬০ বছরের নারীদের বছরে ১ বার করে জরায়ু পরীক্ষা করা। তবে পরপর ২ বার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে প্রতি ৩ থেকে ৫ বছর পরপর জরায়ু পরীক্ষা করা। তবে ঝুঁকি আছে এমনটা ডাক্তার বললে অবশ্যই ৩ বছর পরপর ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
৪. টিকা প্রদানের মাধ্যমে অবিবাহিত নারীদের জরায়ু ক্যান্সার থেকে নিরাপদ রাখতে হবে।
৫. নারীদের সাহস যোগাতে পুরুষদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।

জরায়ু ক্যান্সারের রিক্স ফ্যাক্টর কি কিঃ

জরক্যু ক্যান্সার হওয়ার কিছু কারণ আছে। কারণগুলো হচ্ছে-
★ অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া,
★ অল্প বয়সে সন্তান নেওয়া,
★ একাধিক পুরুষের সাথে যৌন মিলন বা যৌন সম্পর্ক থাকা,
★ কোনো ব্যক্তির আগের স্ত্রী এই রোগে আক্রান্ত ছিল এমন ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া,
★ যৌন উত্তেজক খাবার বড়ি গ্রহণ করা,
★ ঘনঘন এবং অধিক সন্তান জন্ম দেওয়া,
★ বিভিন্ন ধরণের ইনফেকশন থাকা। যেমনঃ এইচ.আই.ভি, ক্লামাইডিয়া, হিউম্যান পেপিলমা ভাইরাস ইনফেকশন।
এই কারণগুলো কোনো নারীর মাঝে থাকলে সেই নারীর জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ এই সকল কারণ নারীর শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু তৈরিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। এই বিষয়গুলোতে লক্ষ্য রেখে সচেতন থাকতে পারলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।

সমাজে নিন্মবিত্ত মানুষদের মধ্যে অধিকাংশেরই শিক্ষা ও সচেতনতার অভাবে বিরাজমান। যে কারণে স্বাস্থ্য সচেতনতা কি সে সম্পর্কে তারা তেমন কিছু জানে না। কিন্তু যারা সমাজে বিত্তবান এবং মোটামুটি বা উচ্চ পর্যায়ে পড়ালেখা করেছে, তাদের মধ্যেও অধিকাংশউ স্বাস্থ্য সচেতনতায় অনাগ্রহী। যারা পড়ালেখা করেছে এবং বিত্তবান তাদের উচিত নিজেকে স্বাস্থ্য সচেতন হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি সমাজের নিন্মবিত্তের মানুষদের সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। আমাদের একটু প্রচেষ্টা আমাদের দেশের অনেক মা-বোনকে এই মরণব্যাধি থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে।

আসুন নিজে সচেতন হই। নিজের শরীরের প্রতি বিশেষ যত্নবান হই। পাশাপাশি সচেতন করি আমাদের পরিবার, পরিচিত ও প্রতিবেশীদের। মনে রাখবেন সচেতনতাই সুস্থ থাকার প্রধান ঔষধ।

আরও পড়ুনঃ কখন ও কেন জরায়ু কেটে বাদ দিতে হয়। 

Leave a Comment