কারা রক্তদান করতে পারবে না?

অনেক যুবক ও যুবতীসহ মধ্য বয়স্ক ব্যক্তিরা বর্তমানে আগ্রহী হয়ে উঠছে মানবতার কাজে। আর এই মানবতার কাজে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হচ্ছে রক্তদানের মাধ্যমে অন্যের জীবন বাঁচানোর উসিলা হতে। মহৎ কাজের মধ্যে সর্বোত্তম কাজ বলা হয়ে থাকে এই রক্তদানকে। কারণ, রক্তদানে একটি প্রাণ বাঁচলে সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচানোর সওয়াব পাওয়া যায়। তবে অনেকেই জানেন না কারা রক্তদান করতে পারবে আর কারা নয়। রক্তদানে অক্ষম মানুষ যদি রক্তদান করে তবে রক্তদাতার পাশাপাশি রোগীকে ক্ষতি বা শারীরিক অসুস্থতা বরণ করে নিতে হয়। এমনকি রক্তদানে অক্ষম কিছু ব্যক্তির রক্ত রোগীর প্রাণ পর্যন্ত কেড়ে নিতে পারে।

রক্তদান করতে হলে সকল শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতা অর্জন করে তবেই রক্তদান করতে হবে আমাদের।

তাহলে আসুন আজ জেনে নেই কারা রক্ত দিতে পারবে নাঃ-

১/  যাদের বসয় ১৮ এর নিচে এবং ৫৮ এর উপরে এবং পুরুষ হলে ওজন ৫০ এর কম আর মহিলা হলে ৪৮ এর কম তারা রক্তদান করতে পারবেন না।

 

২/ যারা কুকুরের কামরের ইঞ্জেকশন
নিয়েছেন,ইঞ্জেকশনের কোর্স শেষ হওয়ার ১ বছরের মধ্যে
রক্তদান করবেন না।
.

৩/ কোন কারণে যদি কেউ রক্ত গ্রহন করে থাকেন তবে
তিনিও ১ বছর রক্তদান করতে পারবেন না। ১ বছর
অবজার্ভেশনে থাকার পর উক্ত ব্যক্তি পরিপূর্ণ সুস্থ থাকলে ও রক্তদানে সক্ষম হলে তবেই রক্তদান করতে পারবেন ।
.
৪/ জন্ডিস , হেপাটাইটিস বি/সি ,ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, সিফিলিস রোগ হলে,সুস্থ হওয়ার পরেও ৬মাস রক্তদান করতে পারবেন না। জন্ডিস ব্যতীত বাকি রোগীদের সুস্থ হওয়ার পরেও রক্তদান থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এগুলো রোগের জীবাণু যে কোন সময় সক্রিয় হতে পারে।
.
৫/ যার কোনো জীবানু ঘটিত চর্মরোগ বা যৌনরোগ আছে
তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হবার পরেও ৬ মাস রক্তদান করতে পারবেন না।
.
৬/ গত ৬ মাসের মধ্যে যে মহিলা গর্ভপাত করেছেন বা গর্ভপাত হয়েছে বা বর্তমানে সন্তান সম্ভবা এমন মহিলা রক্তদান করতে পারবেন না।
.
৭/ যে মহিলার সন্তান এখনও মাতৃদুগ্ধ পান করে,তিনি
রক্তদান করবেন না।
.
৮/ যে মহিলা বর্তমানে ঋতুচক্রের মধ্যে আছেন(মাসের
নির্দিষ্ট ৩-৭ দিন)তিনি রক্তদান করতে পারবেন না। ঋতুচক্র শেষ হওয়ার পরে এক সপ্তাহ রক্তদান থেকে বিরত থাকতে হবে।
.
৯/ যারা শরীরে সূচালো/ধারালো কিছু দিয়ে উল্কি/ট্যাটু
করিয়েছেন তারাও ৬ মাস রক্তদানে অক্ষম। ৬ মাস
অবজার্ভেশনের পর সুস্থ থাকলে রক্ত দিতে পারবেন। ট্যাটু থেকে স্কীন ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকায় অনেক হাসপাতাল এমন ব্যক্তির রক্ত নেয় না।
.
১০/ যে ব্যাক্তি বর্তমানে কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক ঔষুধ
খাচ্ছেন/নিচ্ছেন তিনি কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত এবং কোর্স শেষ হওয়ার ১৪ দিন পর পর্যন্ত রক্তদান করতে পারবেন না । অনেকেই ৭ দিনের কথা বলে থাকে।
.
১১/ যিনি গত ১২ ঘন্টার মধ্যে নেশাজাত দ্রব্য/সুরাপান করেছেন তিনি রক্তদান করতে পারবেন না। কোনো ব্যাক্তি যদি নিয়মিত নেশা সেবন বা সুরাপানে অভ্যস্ত হন,তাহলে তার কাছ থেকে রক্ত গ্রহণ করবেন না। তিনি রক্তদানের অযোগ্য।
.
১২/ হার্ট ও স্ট্রকের রোগী রক্তদান করতে পারবেন না ।
.
১৩/ মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত বা মানসিক রোগীদের কাছ
থেকে রক্তগ্রহন করা উচিত নয়। সুস্থ হলে রক্তদান করতে কোন সমস্যা নেই।
.
১৪/ একবার রক্তদান করে ১২০ দিনের(কমপক্ষে ১১২ দিন)
মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।
.
১৫/ ইনসুলিন নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগী রক্তদান করতে পারবেন না। যদি ঔষধ সেবন করে থাকেন তবে জরুরী মুহূর্তে রক্তদান করতে বাঁধা নেই।

১৬/ যে ব্যাক্তি একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সংসর্গে অভ্যস্ত
তার রক্ত নেওয়া যাবে না। পতিতা পল্লীর
লোকজন,জেলখানার কয়েদি বা দুরগামী ট্রাকের
ড্রাইভারের কাছ থেকে রক্ত নেয়া উচিত নয় বা
অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

১৭/ প্রেশার স্বাভাবিক না থাকলে রক্তদান করতে পারবেন
না।

১৮/ ক্যান্সার,থ্যালাসেমিয়া, রক্তশূন্যতার রোগীরা রক্তদান
করতে পারবেন না ।

১৯/ শারীরিক ভাবে সুস্থ না থাকলে রক্তদান করা ঠিক না ।

২০/ জ্বর থাকলে রক্তদান করা যাবে না।

২১/ করোনার টিকা নেওয়ার পর ২৮ দিন রক্তদান থেকে বিরত থাকতে হবে।

২২/ যাদের বড় ধরনের অপারেশন হয়েছে,তারা পরিপূর্ণ
সুস্থ হবার পর ১ বছর রক্তদান করতে পারবেন না।

আসুন নিয়ম মেনে রক্তদান করি, 

নিজে সুস্থ থাকি, অন্যকেও সুস্থ করে তুলি।। 

 

–Rumel Rahman

Leave a Comment