যে খাবারগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়।

মহামারী সংকট কাটিয়ে ওঠা বা যে কোন রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে কার্যকরী ও শক্তিশালী হাতিয়ার আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আপনি হয়তো আপনার ডায়েট লিস্টে অথবা প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন। কিন্তু এই সকল পরিবর্তন বা প্রচেষ্টার সবই বৃথা হয়ে যাবে, যদি কিছু নির্দিষ্ট খাবার আপনার ডায়েট লিস্টে রেখে থাকেন। বুঝে ওঠার আগেই এসব খাবার আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
আমাদের ডায়েট লিস্টে হয়তো রঙিন শাকসবজি ও ফলমূলের অভাব নেই। কিন্তু তারপরও এর উপকারিতা বা কার্যক্ষমতা আমাদের মধ্যে লক্ষ্য করতে পারি না। যদি আমরা এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি, তাহলে আমাদের ডায়েট লিস্টে অবশ্যই এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো এসব ভালো খাবারের উপাদানগুলোকে শরীরে নষ্ট করে দিচ্ছে। আসুন তাহলে জেনে নেই কোন ধরনের খাবারগুলো ভালো খাবারের পুষ্টিগুণগুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে-

চিনিঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এমন খাবারের মধ্যে প্রথম সারিতে বা প্রথমেই যে খাবারটির নাম আসে সেটি হচ্ছে চিনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এটি দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের ডায়েটলিস্টে যত ভালো খাবারই রাখি না কেন, তাতে কোন লাভ হবে না। যদি চিনি খাওয়া বাদ দিতে না পারি তবে আমাদের ডায়েট করা আর না করা একই বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

লবণঃ
চিনির মত লবণও একটি ক্ষতিকর খাবার। লবণ আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিঘ্ন ঘটায়। লবণ ব্লাড প্রেসারের পাশাপাশি শরীরে চর্বি বাড়িয়ে দেয়। কিডনীর জন্যও ক্ষতিকর একটি খাদ্য এই লবণ। তাই পারতপক্ষে যতটা সম্ভব কম লবণ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

ভাজাপোড়া/ফাস্টফুডঃ
সারাদিন ফলমূল, প্রোটিন ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করে অতপর সন্ধ্যার খাদ্য তালিকায় হোটেল বা বাসায় তৈরি করা ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড রাখলাম। আমাদের সারাদিনের প্রচেষ্টা পুরোটাই মাটি করে দিবে এই খাদ্যগুলো।
অতিরিক্ত ভাজাপোড়া আর ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করতে না পারলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ বাড়ার বদলে উল্টো কমতে থাকবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবশ্যই ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এর পরিবর্তে বাদাম, কলা, ফলমূল, ডিম, দুধ এসকল খাবার রাখতে হবে নিজেদের খাদ্য তালিকায়।

ধুমপান, তামাক, মদপানসহ নেশা জাতীয় দ্রব্যঃ

ধুমপান, তামাকসহ সকল প্রকার মাদকদ্রব্য সেবন শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এসকল দ্রব্য আমাদের লাঙ্ক বা ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এমনকি আমাদের দেহকে ক্যান্সারের দিকে ধাবিত করে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটিয়ে থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে একজন ধুমপায়ী ব্যক্তির থেকে অধুমপায়ী ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। আবার ধুমপায়ী ব্যক্তির বিভিন্ন মহামারী বা সংক্রমক রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা এবং মৃত্যুর হারও অনেক বেশি।অ্যালকোহল বা মদ আমাদের লিভার খারাপ করে দেয়। এর পাশাপাশি আমাদের ইমিউনিটিও দুর্বল করে দেয় অ্যালকোহল। ফলে স্ট্রোক, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সারসহ অন্যান্য মারাত্মক রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

এছাড়া অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্য আমাদের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটায়, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং ব্রেন হ্যামারেজের মত মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।
তাই, বেঁচে থাকার জন্য বা সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে এসব খারাপ অভ্যাস থাকলে এখনই আমাদের এসব অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট ও রক্তদাতা অনুসন্ধান করতে নিচের লিংকে ক্লিক করে রেজিষ্ট্রেশন করুনঃ
https://roktobondhon.com/blog

 

কেক, প্রেস্ট্রি, সফট ড্রিংকসঃ
এসব খাবার ছাড়াও কেক ও পেস্ট্রির মত খাবারে অতিরিক্ত চিনি, ময়দা আর স্নেহ পদার্থ থাকে। যা আমাদের শরীরের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন ধরনের সফট ড্রিংকস বা কোমল পানীয় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটা জানার পরেও আমরা প্রায়ই এইসব খাবার খেয়ে বা পান করে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছি। সফট ড্রিংক আমাদের শরীরে চর্বি বাড়িয়ে দেয়।

স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসব খাবার পরিহারের বিকল্প আর কিছু নেই।
দৈনন্দিন জীবনে এসব খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস পুষ্টিকর খাবারের পুষ্টিগুণ থেকে আমাদের বঞ্চিত করছে। তাই ভালো খাবারের পুষ্টিগুণগুলো পেতে অবশ্যই আমাদের এ সকল অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয় পানের অভ্যাস যত দ্রুত সম্ভব পরিত্যাগ করতেই হবে।

 

-Rumel Rahman 

Roktobondhon.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *