৪ মাসে রাজশাহীতে প্রাণ গেল ৬১ নবজাতকের, অধিকাংশতেই পরিবারের অতিরিক্ত সতর্কতা দায়ী।

বিগত ৪ মাসে প্রি-ম্যাচুয়ার বেবি, অক্সিজেন কম, ওজন কম এমন ৬২ জন বাচ্চার রক্তের প্রয়োজনে রোগীর পরিবার থেকে কল দিয়েছে আমাদের। এর আগে ৬০ জন বাচ্চার মধ্যে কেউই বাঁচে নি 😥
কেউ ২ দিন, কেউ ৩ দিন বা ৪ দিন, কেউ ৭ দিন আবার কেউ মারা গেছে সর্বোচ্চ  ৩২ দিন দিনের মাথায়। উপরের বাচ্চাটা আজ বিকেলে ৬ দিনের মাথায় মারা গেল 😥
আমাদের চেষ্টার কোন ট্রুটি রাখি নি।

গতকালও একজন ডোনার ম্যানেজ করে এবং ব্লাড ব্যাংক থেকে একটি ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমার ব্যবস্থা করে দিয়ে চেষ্টা করেছিলাম বাচ্চাটিকে সহায়তা করার জন্য। আজ দুপুরে রোগীর ভাই কল করে জানায় ডাক্তার আজও ২ ব্যাগ FFP ( Fresh Frozen plasma) চেয়েছে। ডোনারের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানায়, ডোনারের বাবা মারা গেছে, তিনি বাবার দাফন সম্পন্ন করতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। পোস্ট করার পরে ডোনার ম্যানেজ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাচ্চাটির সময় ততক্ষণে শেষ। বেজে গিয়েছিল বিদায় ঘন্টা। রোগীর ভাই যোগাযোগ করার ১ ঘন্টা পরেই মারা যায় বাচ্চাটি৷ এটি নিয়ে ৬২ টি রিকুয়েস্টের মধ্যে ৬১ তম বাচ্চা প্রাণ হারালো। আরেকজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন। হয়তো বাঁচবে না এই বাচ্চাটিও। সন্তান গর্ভে ধারণ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসা অনেক কষ্টের কাজ। কিন্তু সেই সন্তান যদি এভাবে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় একজন মা বা বাবার কাছে মনে হয় এর থেকে বেশি কষ্টের আর কিছুই নেই 😥

সতর্ক হোন, সন্তান গর্ভে আসলে নিজের যত্ন নিন। পরিবারের সকলে মনে রাখবেন, গাছের যত্ন যত বেশি ফল তত ভালো পাবেন।

গর্ভবতী মায়েদের প্রতি অনুরোধ। গর্ভে সন্তান আসার পরে ভারী কাজ থেকে বিরত থাকুন, কিন্তু অন্যান্য কাজ স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যান। আপনাদের স্থুলতাই কেড়ে নিচ্ছি সন্তানের প্রাণ।

সকলে দোয়া করবেন যেন সন্তান হারানো পরিবারকে আল্লাহ পাক শোক সহ্য করার তৌফিক দান করেন। এবং ভবিষ্যতে উত্তম সন্তান দিয়ে ধন্য করেন।

Leave a Comment