ছবিতে যে রক্তদাতা ভাইকে দেখছেন তার নাম শাহরিয়ার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে পড়ালেখা করেছেন। বাসা জয়পুরহাটে।
ভাইকে দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও স্বাভাবিক নয় তিনি। আল্লাহ পাক তাকে শারীরিক অক্ষমতা দিয়ে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন৷ ভাইয়ে মাজা ও পায়ে সমস্যা থাকায় স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারেন না তিনি। সমাজে তাদেরকে প্রতিবন্ধী বলে বিবেচনা করা হয়।
অথচ এই সমাজেই সুস্থ্য ও স্বাভাবিক অনেক মানুষ আছে যাদের রক্তদানের আহ্বান জানানো হলে নানা অজুহাত দেখিয়ে পিছিয়ে যায় তারা। শুধু রক্তদানই নয়, মানবতার কল্যানে কোন কাজে সহযোগিতা করতে বললে অজুহাত দেখিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মানবতার কাজ করে এমন মানুষদেরও নানা ধরনের কথা বলে অপমান করে। তাদের নিয়ে মজা করতেও ছাড়ে না।
রক্তদানে পিছিয়ে থাকার পাশাপাশি এবং মানবতার কাজ করে এমন মানুষদের হাসির পাত্র বানায়, শাহরিয়ার ভাই আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন “প্রতিবন্ধকতা শরীরে নয়, থাকে মানসিকতায় “।
প্রতিবন্ধকতা দূরে সরিয়ে রেখে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত এক রোগীর প্রয়োজনে রক্তদান করতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে আসেন৷ আর যথাসময়ে এক ব্যাগ এ পজেটিভ রক্তদান করে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।
রক্তদানের সময় শাহরিয়ার ভাই বলেছিলেন, ভাইয়া আমার ছবি নিয়েন না। ভাইয়াকে শুধু বলেছিলাম ” ভাইয়া আপনার ছবি দিয়ে পোস্ট দেখে আমাদের মত শারীরিকভাবে সুস্থ এমন অনেক মানুষ অনুপ্রেরণা পাবে। তারাও এগিয়ে আসবে রক্তদানের মাধ্যমে একটি প্রাণ বাঁচাতে। যেহেতু ছবি তুলতে চাচ্ছেন না, তাহলে হাতের একটা ছবি নেই ভাইয়া? তখন শাহরিয়ার ভাই বলেন, আমার ছবি দেখে যদি মানুষ রক্তদানে এগিয়ে আসে তাহলে পুরো ছবি নেন ভাই। ” আর বিদায়ের সময় বারবার বলে গেলেন, ৪ মাস পরে রক্তের প্রয়োজন হলে যেন ভাইয়াকে কল দেই। তিনি আবার আসবেন রক্ত দিতে।
মানসিকতা আর মানবিকতা কি তা ভাইয়া আজ শিখিয়ে দিয়ে গেলেন।
সাথে যে সকল সুস্থ্য মানুষ অজুহাতে রক্ত দিতে পিছিয়ে থাকে তাদের বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন, ” মানসিকতায় প্রতিবন্ধকতা থাকে, মানসিকতায় নয় ”
আসুন অজুহাত নয় হাত দেই। সেটা রক্তদানে আর মানবিক কাজে।
শাহরিয়ার ভাইয়ের পরবর্তী রক্তদানের সময় হবে ২৮-০৬-২৩ তারিখে।