রক্তদানের উপকারিতা, নিষেধাজ্ঞা ও কিছু নিয়ম-কানুন

রক্তদানের উপকারিতাঃ
রক্তদানের সময় সকল রক্তদাতার পাঁচটি টেষ্ট করানো হয় – যা একেবারেই বিনামূল্যে।

১) হেপাটাইটিস বি
২) হেপাটাইটিস সি
৩) এইচ আইভি এইডস
৪) সিফিলিস
৫) ম্যালেরিয়ার জীবাণু

সুতরাং, শরীরে এইসকল রোগের জীবাণু থাকলে জানা যায় সহজেই জানা যাবে ও ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে।

• রক্তদানে কোনো সমস্যা হয় না। কেননা একজন সুস্থ মানুষের শরীরে পাঁচ-ছয় লিটার রক্ত থাকে। এর মধ্যে সাধারণত ২৫০ থেকে ৪৫০ মিলিলিটার রক্ত দান করা হয়, যা শরীরে থাকা মোট রক্তের মাত্র ১০ ভাগের এক ভাগ। রক্তের মূল উপাদান পানি, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পূরণ হয়।

• রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রক্তদানের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ‘বোনম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকা জন্ম হয় ও এর ঘাটতি পূরণ হয়।

• বছরে তিনবার রক্তদান শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলে ও নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়ায়।

• নিয়মিত রক্তদানকারীর হার্ট ও লিভার ভালো থাকে।

• স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে পাঁচটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনা খরচে করা হয়। এর মাধ্যমে জানা যায় শরীরে অন্য বড় কোনো রোগ আছে কি না। যেমন—হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, এইচআইভি (এইডস) ইত্যাদি।

• রক্তদান অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

• রক্তে কোলস্টেরলের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।

• শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে আয়রন থাকলে নিয়মিত রক্তদান এই রোগ প্রতিরোধ করে।

• মানুষের ওজন কমাতে রক্তদান সহায়ক।

• মুমূর্ষুকে রক্ত দিলে মানসিক তৃপ্তি মেলে।

• রক্তদান সওয়াবের কাজ।

#রক্তদানের শর্তসমূহঃ

• রক্তদাতাকে সুস্থ থাকতে হবে।

• রক্তদাতার বয়স ১৮-৬০ হতে হবে। রক্তদাতা ছেলে হলে দেহের ওজন কমপক্ষে ৫০ ও মেয়ে হলে ওজন ৪৮ কেজি হতে হবে।

• দাতার রক্তের স্ক্রিনিং টেস্ট বা রক্ত নিরাপদ কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা।

• ভরপেটে খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর রক্ত দেওয়া শ্রেয়।

• কোনো রূপ এনার্জি ড্রিংক, ধুমপান বা নেশজাত দ্রব্য রক্তদানের আগে সেবন না ও রক্তদানের পরে ২ চা, কফিসহ ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান না করা।

• যাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তদান করতে পারেন। তবে ইনস্যুলিন নিলে রক্ত দেওয়া যাবে না।

##যে সকল ব্যক্তির রক্তদান করা নিষেধঃ

• ক্যান্সার, হিমোফিলিয়া, ম্যালেরিয়াসহ জীবাণুঘটিত কোনো রোগী।

• এইচআইভি বা এইডস আক্রান্তরা।

• মাদক সেবনকারী।

• হেপাটাইটিস-বি ও সি-র এন্টিজেন পজিটিভ যাদের। পরবর্তী সময় তা নেগেটিভ হলেও রক্ত দেওয়া যাবে না।

• গর্ভবতী মহিলা।

• যাদের অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হয়।

• যারা বারবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।

• গত তিন মাসের মধ্যে রক্তদান করেছেন এমন মানুষ। ৪ মাসের আগে রক্তদান করা উচিৎ নয়। তবে রোগীর অবস্থা খুব ইমার্জেন্সি হলে আর ঐ সময়ে রক্ত পাওয়া না গেলে ৩ মাসে রক্ত দেওয়া যাবে। কিন্তু তা রেগুলার নয়।

• যাদের শরীরের কোনো স্থানের গ্ল্যান্ড (লিম্ফনোড) ফুলে গেছে। বিশেষ করে ঘাড়, গলায়, হাতের নিচের গ্লান্ড।

প্রচারেঃ রক্ত বন্ধন – Rokto Bondhon পরিবার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *