কিছু কিছু খাবার আছে যা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে খেলে বা পান করলে পিরিয়ডের রোগীর শারীরিক কষ্ট বাড়ায়। পাশাপাশি দেহে দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে ।
আজ আলোচনা করবো পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে কি কি খাবার এবং কাজ বর্জন করতে হবে।
♦শসা
★★ পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ভুলেও শশা খাবেন না। কারণ শশার মধ্যে থাকারস নামের উপাদান থাকে, যা পিরিয়ডের রক্তকে জরায়ু প্রাচীরে আটকে দিতে পারে। যার ফলে আপনার বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শসার এই উপাদান এই সময়ে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
♦ কোল্ড ড্রিঙ্ক/সফট ড্রিংক/অ্যালকোহল
★★ পিরিয়ডের সময় কোল্ড ড্রিঙ্ক/সফট ড্রিংক বা কোন প্রকার অ্যালকোহল একদমই পান করবেন না। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, এই সময় এই ধরনের পানীয় খেলে ইউটেরাইন ওয়ালে রক্ত থেকে যায়। এমনটা হতে থাকলে ৫-১০ বছর পরে গিয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বেড়ে যায়।
♦ দুধ, চিজ বা দই
★★ পিরিয়ডের সময় দুধ, চিজ বা দইয়ের মতো ডেইরি প্রডাক্ট বেশি মাত্রায় খেলে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে শারীরিক কষ্ট মাত্রা ছাড়াতে সময় লাগে না। তাই এসময় দুধ এবং দুধ থেকে বানানো খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
♦ নারিকেল ও তেঁতুল
★★ এ সময় নারিকেল ও তেঁতুল রক্তের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে শরীর অধিক দুর্বল ও ক্লান্ত করে দিয়ে থাকে। এজন্য এই সময় নারিকেল ও তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
♦ জাঙ্ক ফুড
★★ জাঙ্ক ফুড খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল নয়। আর এই সময় এমন খাবার খেলে তো আরও বিপদ! পিরিয়ডের সময় ফ্রায়েড খাবার খেলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
♦লবণ
★★ পিরিয়ডের সময় বেশি মাত্রায় লবণ রয়েছে এমন খাবার, যেমন ধরুন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই জাতীয় পদ বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে পিরিয়ডকালীন কষ্ট আরও বেড়ে যায়। তাই মাসের এই নির্দিষ্ট সময়ে যতটা সম্ভব কম লবণ খাবেন।
♦খালি পেটে না থাকা
★★ পিরিয়ডের সময় খালি পেটে একেবারেই থাকবেন না। এ সময় যেহেতু মাত্রতিরিক্ত পরিমাণে এনার্জি লস হয়, তাই এই ঘাটতি পূরণের ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করাটা জরুরী।
♦ শ্যাম্পু ব্যবহারে সর্তকতা
★★ পিরিয়ডের সময় মাথায় শ্যাম্পু ব্যাবহার করবেন না। কারণ এই সময় চুলের গোড়া আলগা হয়ে থাকে। ফলে লোমকূপ উন্মুক্ত এবং নরম হয়ে যায়। শ্যাম্পু ব্যবহার এ সময় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
♦শরীরচর্চা
★★ এই সময় অল্প বিস্তর শরীরচর্চা চলতে পারে। কিন্তু ইনটেন্স ওয়ার্কআউট করা একেবারেই চলবে না। আর যদি পেটে এবং পিঠে ব্যথা থাকে, তাহলে তো একেবারেই শরীরচর্চা করা যাবে না।
♦রাত না জাগা
★★ এই সময় রাত জাগলে শরীর কাজ করার ক্ষমতা বা শক্তি একেবারে হারিয়ে ফেলে। সেই সাথে, শারীরিকভাবে আরও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, ঘুম না হওয়ার কারণে ক্লান্তিভাব এতটাই বেড়ে যায় যে দৈনন্দিন কাজ কর্মেও বাঁধা আসতে শুরু করে। তাই পিরিয়ডের সময় রাত জাগা একেবারেই চলবে না।
♦♦ সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ★
এসব কাজ পরিহারের পাশাপাশি লক্ষ্য রাখবেন, পিরিয়ডের সময় যেন শরীরে শক্ত কিছুর আঘাত না লাগে, বিশেষত পেটে। কারণ, পিরিয়ডের সময়টায় জরায়ু খুবই নাজুক অবস্থায় থাকে। ফলে অল্প আঘাতেই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে জরায়ু। যার ফলে পরবর্তীতে জরায়ু ক্যান্সার,জরায়ুতে ইনফেকশন কিংবা বন্ধ্যাত্যের ঝুঁকি তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ঠান্ডা পানি পান করার ফলে পিরিয়ডের রক্ত বের না হয়ে জরায়ু প্রাচীরে জমাট বাঁধতে পারে। যা পরবর্তী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে জরায়ু টিউমার বা ক্যান্সারের আকার ধারণ করতে পারে। ফার্মেসীর প্যাডগুলো শুকনো রাখার জন্য ব্যবহৃত হয় জেল। এই জেল এমন একটি উপাদান, যা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এই ধরনের ক্যান্সারের প্রকোপ গত কয়েক বছরে প্রকট আকার ধারন করার পিছনে অন্যতম একটি কারণই স্যানিটারি প্যাডের দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাবহার। তাই সবাই সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন হতে সাহায্য করি।।
আরও জানুনঃ সিজোফ্রেনিয়ার কয়টি লক্ষণ আছে আপনার মাঝে
Pingback: মেনোরেজিয়াঃ কারণ, উপসর্গ, চিকিৎসা এবং পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় - রক্ত বন্ধন - Rokto Bondhon