ফুসফুসের একটি রোগের নাম পালমোনারি ফাইব্রোসিস, যা ফুসফুসে দাগ পড়লে বা ফুসফুসের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্থ হলে হয়ে থাকে। এই রোগটি টিস্যুকে ঘন ও শক্ত করে ফেলে। ফুসফুসের বায়ু থলির (অ্যালভিওলি) চারপাশে এবং মাঝের টিস্যুতে পুরু দাগ দেখা যায়। এর ফলে ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ হ্রাস পাওয়ার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি সঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না। শুধু এই কারণেই নয়, কিছুক্ষেত্রে টক্সিন, কিছু ঔষধ সেবনের ফলে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আর যেখান থেকে হতে পারে পালনোনারি ফাইব্রোসিস।
রোগটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। ফলে শ্বাসকষ্টের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেই সাথে অবিরাম কাশি, ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। কভিড বা করোনার পরে অনেক মানুষকে এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। শুধু বয়স্ক রোগীই নয়, পাশাপাশি শিশু, যুবক, মধ্যবয়সী, ধুমপায়ী এবং পূর্বে ধুমপান করতেন এমন ব্যক্তিদের বিভিন্ন কারণে এই পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত হতে পারে।
বিভিন্ন কারণে এই রোগে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তার এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারে না। নির্ণয় করতে না পারার এই অবস্থাকে বলা হয় ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস। ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিসের চিকিৎসা থেরাপিতে ভালোভাবে সাড়া দেয় না। তবে অন্য কিছু ধরণের পালমোনারি ফাইব্রোসিস দমনে ইমিউন দমনকারী থেরাপি সাড়া দিতে পারে। এই সকল পালমোনারি ফাইব্রোসিসের মধ্যে রয়েছে অনির্দিষ্ট ইন্টারস্টিশিয়াল নিউমোনাইটিস। পালমোনারি ফাইব্রোসিসের কারণে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেই ক্ষতি সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় না। তবে, ঔষধ এবং থেরাপির মাধ্যমে সমস্যাসমূহ কমিয়ে আনা এবং জীবন-যাপনের মান উন্নত করা সম্ভব। আবার ফুসফুস বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হলে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
রোগের লক্ষণঃ
পালমোনারি ফাইব্রোসিসের একাধিক লক্ষণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-
★ নিশ্বাসের দুর্বলতা,
★ শুকনো কাশি,
★ ক্লান্তি,
★ কারণ ছাড়া ওজন হ্রাস পাওয়া,
★ পেশী এবং জয়েন্টগুলোতে ব্যথা,
★ আঙুল বা পায়ের আঙুলের ডগা প্রশস্ত হওয়া এবং গোলাকার হওয়া।
লক্ষণগুলোর তীব্রতা সাধারণত ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। কিছু লোক খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। আবার অনেকের মাঝে মাঝারি উপসর্গ দেখা দেয়, যা ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে। উপসর্গগুলো মাসের পর মাস এমনকি বছর ধরে খারাপের দিকে যেতে পারে। কিছু লোকের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলোর দ্রুত অবনতি লক্ষ্য করা যায়। এই দ্রুত অবনতি হওয়াকে রোগটির তীব্র পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা করা হয়। এই তীব্র পর্যায়ের রোগীগুলোকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। আর চূড়ান্ত পর্যায়ের রোগী বা ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীর চিকিৎসায় চিকিৎসকগণ এন্টিবায়োটিক বা অন্যান্য ঔষধও দিতে পারেন।
রোগের কারণঃ
পালমোনারি ফাইব্রোসিস বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে-
১. সংক্রমণ,
২. দীর্ঘদিন প্রদাহজনক সমস্যা,
৩. দীর্ঘস্থায়ী বক্ষ্য জনিত রোগে আক্রান্ত থাকা,
৪. কিছু ঔষধ সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া,
৫. বুকের টিউমারের চিকিৎসার জন্য রেডিয়েশন থেরাপির মত আয়নাইজিং,
৬. রেডিয়েশন এক্সপোজার,
৭. এনভায়রনমেন্ট এজেন্ট বা পরিবেশ দূষণ, যেমন: এসবেস্টার সিলিকা, নির্দিষ্ট গ্যাসের এক্সপোজার প্রভৃতি।
৮. সংযোগকারী টিস্যুর রোগ,
৯. ফুসফুসের আন্তঃস্থায়ী রোগ,
১০. পূর্বে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত ছিল এবং কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া,
১১. ধুমপান করা বা পূর্বে ধুমপান করেছেন,
১২. ফুসফুসের কার্যকারিতা পরীক্ষা,
১৩. ফুসফুসের বায়োপসি ইত্যাদি।
আবার পালমোনারি ফাইব্রোসিস হওয়ার ঝুঁকি এমন কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে-
বয়সঃ
মূলত বয়স্ক রোগীরা ফুসফুসের এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে মধ্যবয়স্ক এমনকি শিশুদেরও মাঝেও এই রোগ নির্ণয় করা হয়েছে। মূলত করোনার পরবর্তী সময়ে এই রোগটি সকল বয়সের মানুষকে এই রোগটিতে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে।
লিঙ্গঃ
মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ধুমপানঃ
ধুমপায়ী এবং পূর্বে ধুমপান করতো এমন ব্যক্তিদের সাধারনত ফুসফুসের ফাইব্রোসিসে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। আবার পরোক্ষ ধুমপায়ীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। তবে যারা কখনোই ধুমপান করে নাই, এমন ব্যক্তিদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ও হার অনেক কম।
কিছু পেশাঃ
খনিতে কাজ, খনন, কৃষিকাজ, নির্মাণকাজ, ওয়েল্ডিংয়, লেদের কাজ, সোনা রুপার গহণার কাজ যারা করে এই ধরণের মানুষের ফুসফুস খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। আবার এই সকল কাজের স্থানে বা ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলেও অন্য ব্যক্তির পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
টিউমার ও ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ
ফুসফুস বা লিভার ক্যান্সার বা টিউমার আক্রান্ত রোগীর বুকে রেডিওথেরাপি দেওয়া বা কিছু কেমোথেরাপির ঔষধ ব্যবহারের ফলেও পালমোনারি ফাইব্রোসিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
জেনেটিক ফ্যাক্টরঃ
কিছু ধরণের পালমোমারি ফাইব্রোসিস জেনেটিক ফ্যাক্টরের একটি উপাদান হতে পারে। অর্থাৎ বাবা-মা বা পূর্বপুরুষের এই রোগ থাকলে সন্তান বা পরবর্তী প্রজন্ম এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
রোগ নির্ণয় পদ্ধতিঃ
রোগীর অবস্থা নির্ণয় করার জন্য রোগীর চিকিৎসার ইতিহাস এবং পারিবারিক ইতিহাস জানাটা চিকিৎসকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর লক্ষণ ও উপসর্গের পাশাপাশি রোগীর পূর্বের চিকিৎসা ও পারিবারিক ইতিহাস জানার পরে ডাক্তার কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করবেন। পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে-
শারীরিক পরীক্ষাঃ
রোগী শ্বাস নেওয়ার সময় তার ফুসফুসের অবস্থা কেমন তা নির্ণয় করতে বুকে ও পিঠে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করবে। অত:পর ডাক্তার এক বা একাধিক পরীক্ষার পরামর্শ প্রদান করতে পারেন। এসকল পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে-
বুকের এক্স-রেঃ
বুকের একটি এক্স-রে করানোর মাধ্যমে ফুসফুসের অবস্থা এবং টিস্যুর দাগ নির্ণয় করা হয়। এই এক্স-রে পালমোনারি ফাইব্রোসিস নির্ণয়ের পাশাপাশি রোগীর অসুস্থতা কতটুকু এবং চিকিৎসা পদ্ধতি কি হবে সেই বিষয়ে ধারণা প্রদান করবে। অনেক ক্ষেত্রে এক্স-রে রিপোর্ট স্বাভাবিক দেখাতে পারে। এবং এর ফলে শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করার জন্য আরও পরীক্ষা করতে হতে পারে।
ইকোকার্ডিওগ্রামঃ
ইকোকার্ডিওগ্রামের মাধ্যমে হার্টবিটের অবস্থা নির্ণয় করা হয়। এই পরীক্ষাটি রোগীর হার্টের কাঠামোর স্থির চিত্র তৈরী করে। সেই সাথে ভিডিওর মাধ্যমে হার্ট কিভাবে কাজ করছে তা দেখায়। এই পরীক্ষাটি মানুষের হার্টের ডানদিকের চাপের পরিমাণ নির্ণয়ে সহায়তা করে।
সিটি স্ক্যান বা কম্পিয়টারাইড টেমোগ্রাফিঃ
সিটি স্ক্যান পরীক্ষায় একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে এক্স-রে চিত্রগুলোকে একত্রিত করা হয়। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর ক্রস-ডিভিশনাল চিত্রগুলো তৈরী করার জন্য বিভিন্ন কোন থেকে ছবি নেওয়া হয়। হাই রেজুলেশন সিটিস্ক্যানের মাধ্যমে পালমোনারি ফাইব্রোসিসের কারণে হওয়া ফুসফুসের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়।
এর পাশাপাশি রোগীর ফুসসুসের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা দিতে পারে। যেমন:
পালমোনারি ফাংশন পরীক্ষাঃ
বিভিন্ন ধরণের পালমোনারি ফাংশন পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর ফুসফুসের কার্যকারিতা নির্ণয় করা যেতে পারে। স্পিরোমেট্রি নামক একটি পরীক্ষায় রোগীকে একটি মেশিনের সাথে সংযুক্ত একটি টিউবের মাধ্যমে দ্রুত এবং জোরে জোরে শ্বাস ছাড়তে হবে। এই মেশিনটি রোগীর ফুসফুস কতটা বাতাস ধরে রাখতে পারে এবং কত দ্রুত রোগী বাতাস ছাড়তে পারে তা পরিমাপ করতে সক্ষম।
পালস অক্সিমেট্রিঃ
পালস অক্সিমেট্রি হচ্ছে ছোট একটি ডিভাইস। যা ব্যবহারের মাধ্যমে রোগীর রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন পরিমাপ করার জন্য রোগীর একটি আঙুলে লাগানো হয়। অক্সিমেট্রি মেশিন রোগের গতিপথ নিরীক্ষণ করার উপায় হিসেবে কাজ করে। অক্সিমেট্রি মেশিনকে অনেকে অক্সিমিটার হিসেবে চিনে থাকে।
ব্যায়াম স্ট্রেস পরীক্ষাঃ
সক্রিয় থাকাকালীন রোগীর ফুসফুসের কার্যকারিতা নিরীক্ষণ করতে একটি ট্রেডমিল ব্যবহার করা যেতে পারে। ট্রেডমিলে হাঁটা বা দৌঁড়ানোর মাধ্যমে রোগীর ফুসফুস ও শারীরিক অবস্থা কেমন তা নির্ণয় করা সম্ভব।
ধমনী রক্তের গ্যাস পরীক্ষাঃ
এই পরীক্ষায় ডাক্তার রোগীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেন। সাধারণত কব্জির একটি ধমণী থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। এরপর এই নমুনায় অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা কত তা নির্ণয় করা হয়।
বায়োপসিঃ
উপরোক্ত পরীক্ষাগুলোর পরেও যদি রোগ শনাক্ত করা না যায়, তাহলে ডাক্তার বায়োপসি করার পরামর্শ দিতে পারেন৷ এই পরীক্ষার জন্য রোগীর ফুসফুসের টিস্যুগুলো থেকে ছোট পরিমাণে টিস্যু অপসারণ করে পালমোনারি ফাইব্রোসিস বা অন্য কারণ কি তা নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন।
চিকিৎসাঃ
পালমোনারি ফাইব্রোসিস হয়ে থাকলে তা দমন করার মত কোনো চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয় নাই। বা এই রোগের ক্ষতি রোধ করতে সক্ষম এমন কোনো চিকিৎসাও এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয় নাই। তবে কিছু চিকিৎসার অস্থায়ীভাবে উপসর্গগুলোকে দমিয়ে রাখা বা রোগের অগ্রগতিকে ধীর করতে সহায়তা করে থাকে। রোগীর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা নির্ধারণ করার আগে রোগীর অবস্থা এবং রোগের তীব্রতা মূল্যায়ন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে-
ঔষধঃ
রোগী যদি ইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে, তাহলে ডাক্তার এর অগ্রগতি ধীর করার জন্য কিছু ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে পারে। মনে রাখতে হবে ঔষধ সেবনের ফলে রোগীর শরীরে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
অক্সিজেনঃ
যদিও অক্সিজেন ব্যবহার রোগীর ফুসফুসের ক্ষতি বন্ধ করতে পারে না, তবে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসকে স্বাভাবিক বা সহজ করতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি রক্তে অক্সিজেন কম থাকায় রোগীর শরীরে যে সকল সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, সেই সমস্যাগুলো প্রতিরোধ বা কমিয়ে আনতে পারে। আবার রোগীর হার্টের ডান দিকের রক্তচাপ কমাতেও অক্সিজেন সহায়তা করে থাকে। স্বাভাবিক অক্সিজেন রোগীর ঘুম এবং সুস্থতার অনুভূতিও উন্নত করে তুলতে সক্ষম। অনেক রোগীই সবসময় অক্সিজেন ব্যবহার করে থাকে। তবে এই রোগে আক্রান্ত অনেকে পর্যাপ্ত ঘুম এবং ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের অক্সিজেনের মাত্রাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
পালমোনারি পুনর্বাসনঃ
পালমোনারি পুনর্বাসন শুধুমাত্র রোগীর উপসর্গগুলোই নয়, পাশাপাশি রোগীর দৈনন্দিন কার্যকারিতাকেও উন্নত করতে সহায়তা করে। পুনর্বাসনের মাধ্যমে যে কাজগুলোর উন্নত হয় তা হলো-
• রোগীর সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য শারীরিক ব্যায়াম ও যোগ ব্যায়াম।
• শ্বাস প্রশ্বাসের কৌশল, যা ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।
• পুষ্টির পরামর্শ।
ফুসফুস প্রতিস্থাপনঃ
ফুসফুস ট্রান্সপ্লান্ট বা ফুসফুস প্রতিস্থাপণ পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিকল্প একটি চিকিৎসা। সফলভাবে ফুসফুস প্রতিস্থাপণের ফলে রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে। তবে সফল অস্ত্রপাচার না হলে বা ফুসফুস ম্যাচ বা সঠিকভাবে কাজ না করলে এর কার্যক্রম বন্ধ এবং সংক্রমণের মতো জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। রোগীর শারীরিক অবস্থা ফুসফুস ট্রান্সপ্লান্টের উপযোগী কি না এবং ফুসফুস ট্রান্সপ্লান্টের সুবিধা ও অসুবিধা কি সেই সম্পর্কে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে তারপরেই এই প্রক্রিয়াটি শুরু করতে হবে। আর এই পদ্ধতিটি ব্যয়বহুল হওয়ায় সবার পক্ষে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা নেওয়াটাও সম্ভব নয়।
জটিলতাঃ
পালমোনারি ফাইব্রোসিস থেকে উদ্ভূত কিছু জটিলতা বা রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এসব জটিলতার মধ্য ফুসফুসে উচ্চ রক্তচাপ বা পালমোনারি হাইপারটেনশন, শ্বাসযন্ত্র ফেইলর বা শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতা, ফুসফুসের সংক্রমণ, ফুসফুসের টিউমার, এমনকি ফুসফুসের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।