ডায়েট মানে কি না খেয়ে থাকা?

অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে থাকেন ভাইয়া ডায়েট করছি কিন্তু ওজন কমছে না কেন? ওজন কমার বদলে ওজন বেড়ে যাচ্ছে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এটা কেন হচ্ছে?

কিভাবে ডায়েট করছেন? কি কি খাচ্ছেন? প্রশ্নগুলো করার পরে ম্যাক্সিমাম মানুষ যে উত্তরগুলো দিচ্ছে সেটি হচ্ছে –

> দিনে একবেলা খাবার খাচ্ছি,

> মাঝে মাঝে দাওয়াতে মাংস, পোলাও ইত্যাদি খাচ্ছি,

> বেশি সকাল পর্যন্ত ঘুমাচ্ছি যেন ক্ষুধা না লাগে,

> মাঝে মাঝে সফট ড্রিংক, ড্রিংক পান করা হয়, সেটাও মাসে হয়তো দুই/একবার,

> মাঝে মাঝে খেলাধুলা হয়, সবসময় নয়, ইত্যাদি।

<> আবার অনেকেই সফট ড্রিংক বা ড্রিংক বাদ দিয়েও ওজন কমাতে পারছেন না বলে দাবি করছেন। তাহলে কি ভুল হচ্ছে আপনার ডায়েটে? কি কারণে ওজন বা স্বাস্থ্য কমছে না আপনার? আসুন জেনে নেওয়ার যাক কারণগুলো।

♦ সর্বপ্রথম মনে রাখবেন ডায়েট করা মানে না খেয়ে থাকা নয়। ডায়েট মানে না খেয়ে থাকতে হবে এটি প্রচলিত একটি ভুল ধারণা। ডায়েট করা মানে প্রোটিন এবং চর্বিযুক্ত কিছু খাদ্য পরিহার করে এবং দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজের স্বাস্থ্যকে কমিয়ে নিয়ে আসা। না খেয়ে থাকলে হয়তো ওজন কমতে পারে, কিন্তু সেই সাথে দেখা দিবে শারীরিক দুর্বলতা। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কি করবেন কি খাবেন কি খাবেন না এখং কখন কি খেতে হবে সেগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা। আসুন জানি ওজন কমাতে ডায়েট পালন করবেন কিভাবে। 

★ খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে , ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হাল্কা কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে পান করবেন, যাদের এসিডিটির সমস্যা আছে তারা লেবুর বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

★ পানীয় পানের আধাঘন্টা পরে রানিং বা জগিং করবেন এবং রানিং শেষে প্রচুর পরিমানে পানি পান করবেন।

★ রানিং/জগিং এবং পানি পানের কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিবেন এবং সকাল ৮ টার দিকে একটি সবুজ আপেল বা ২ টা কলা খাবেন। নাস্তায় সর্বোচ্চ ২টি রুটি থাকবে আর সাথে প্রচুর সবজি ও পরিমেয় ডাল রাখবেন, ২ টা রুটি আর সবজি বা ডাল অর্থাৎ সকালের এই নাস্তা খাবেন ৯ঃ৩০-১০ঃ০০ টার মধ্যে।

★ এরপর দুপুরের খাবার খাবেন দুপুর ১ঃ৩০-২ঃ০০ টার মধ্যে। দুপুরের খাবারে ভাত নামক জিনিসটা থাকবে না। শুধু সবজি রাখবেন মাঝারি বাটির ১ বাটি। সপ্তাহে ২-৩ দিনের বেশি ভাত খাওয়া যাবে না। তাও খেলে সর্বোচ্চ ২ কাপ পরিমাণে।

ডায়েটে সবজি ও ফল রাখুন বেশি পরিমাণে ।

★★ দুপুরের খাবার শেষ হওয়ার আধা ঘন্টা পরে পানিতে লেটুস পাতা মিশিয়ে সেটা গরম পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মত করে পান করবেন। আর পান করার সময় লেবুর রস মিশিয়ে নিলে ওজন কমানর ক্ষেত্রে আরও ভালো। এটাই ওজন কমানোর বা আমার ডায়েট ফর্মুলার মুল উপাদান।

★ বিকেলে ক্ষুধা পেলে মুড়ি খেয়ে নিবেন হাফ বা এক বাটি। সম্ভব হলে ২০-৩০ টা কাচা বুট খেয়ে নিতে পারেন। সন্ধ্যা ৭ঃ০০ থেকে ৭ঃ৩০ মিনিটের ভিতরে হালকা কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে সকালের মত পান করবেন। রাত ৮ঃ০০ টা থেকে ৮ঃ৪৫ এর মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিবেন। খাবারে সর্বোচ্চ ২ পিস রুটি এবং সাথে বেশি করে সবজি ও ডাল রাখবেন। রাতের খাবার খাওয়ার মিনিমাম ৩ ঘন্টা পরে ঘুমাতে যাবেন। রাতের খাবারের ৩০ মিনিট পরে সম্ভব হলে আবার দুপুরের ন্যায় লেটুস পাতা মিশ্রিত গরম পানি চায়ের মত পান করে নিবেন।

★ শশা চর্বি কমাতে সহায়তা করে, শশা খাবেন,

★ চিনি ছাড়া গ্রীন টি পান করতে পারেন। গ্রীন টি স্বাস্থ্য কমাতে বেশ সহায়ক।

★ সপ্তাহে ২ দিন মুরগীর মাংস খেতে পারেন।

★ ফলমূলে কোন বাধা নাই। ফল যত খাবেন ততই ভালো, বিশেষ করে ভিটামিন সি-যুক্ত ফল। আমলকী, পেয়ারা, আমড়া, মাল্টা, কমলা, এভোকেডো ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

★গরুর মাংস, হোটেলের ভাজা পোড়া একেবারেই বাদ।

★ অ্যালকোহল, এনার্জি ড্রিংক বা সফট ড্রিংকস পান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে।

★ বিকেলে জিম করতে পারেন সম্ভব হলে, অথবা নিয়মিত খেলাধুলা করতে হবে।

★ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পোস্ট ও রক্তদাতা খুঁজে পেতে নিচের লিংকে রেজিষ্ট্রেশন করুনঃ


https://roktobondhon.com/registration


★★ চিনি একেবারেই খাবেন না। চিনি খেলে ডায়েট করা মূল্যহীন। চিনি ওজন কমতে দেয় না বরং ওজন বাড়িয়ে দেয়। ডায়েটিংয়ের সময় পারতপক্ষে মিষ্টিজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকবেন।

উপরের নিয়মগুলো মেনে আমি মাত্র ৪৫ দিনে ১১ কেজি ওজন কমাতে সক্ষম হয়েছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। চাইলে আপনিও চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

Rumel Rahman

Roktobondhon.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *