গর্ভে বা ভুমিষ্ট সন্তানের মৃত্যুর কারণ কি ?

পেটে বাচ্চা মারা গেছে অথবা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে বাচ্চা মারা গেছে বা ভূমিষ্ট হওয়ার পরে বাচ্চা বাচ্চার অবস্থা ভালো না, ওজন কম, রক্ত স্বল্পতা, অক্সিজেন লেভেল কম আইসিইউতে আছে। প্লাজমা,প্লাটিলেট ও রক্ত দেওয়ার পরেও কিছুদিনের মধ্যে শোনা যায় বাচ্চাটি মারা গেছে। এমন ঘটনা বা সংবাদ আমরা প্রায়ই দেখছি বা শুনতে পাচ্ছি। বর্তমানে এই বিষয়টি অধিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১০-১৩ জন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটছে। কেন এমন হচ্ছে আর প্রতিকারই বা কি?? আসুন জেনে নেই আজ।

আলোচনার আগে কিছু বিষয় আপনাদের চিন্তায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমাদের মা, খালা, ফুফু, নানী বা দাদীদের দিকে একটু খেয়াল করেন। নরমালে তারা ৪,৫,৭ এমনকি ১০ এরও অধিক বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। বাচ্চা সুস্থ্য থেকেছে আবার তাঁরাও সুস্থ ছিল। বাচ্চা মারা গেছে এমন ঘটনা ছিল খুবই রেয়ার। তবে এখন কেন আমাদের বোন বা স্ত্রীর ক্ষেত্রে এমনটা হচ্ছে? বিস্তারিত আলোচনার আগে একটি কারণ আপনাদের নজরে আনছি যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নানি বা দাদী অথবা মা,খালাদের যদি জিজ্ঞেস করেন গর্ভাবস্থায় তারা কিভাবে চলাচল করতো? তাদের থেকে উত্তর পাবেন তারা স্বাভাবিকভাবেই কাজ কর্ম করতেন। শুধুমাত্র অতিরিক্ত ভারী কাজ করতেন না। খাবার খেতেন নিয়মিত।

কিন্তু বর্তমানের চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। লক্ষ্য করে দেখবেন আমাদের বোন, স্ত্রী বা আশেপাশের পরিচিতরা গর্ভধারণ করার পরে কাজ করা কমিয়ে দেয় বা একেবারে বন্ধ করে দেয়। এতে করে তাদের শরীর মোটা হয়ে যায়, চর্বি জমে যায় শরীরে এবং পেটে অতিরিক্ত পানি জমে যায়। আবার খাবার গ্রহণেও তাদের মাঝে অনীহা দেখা যায়। এই দুইটি কারণ আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিপদজনক বলে মনে হয়েছে। কেন মনে হয়েছে তা বিস্তারিত আলোচনায় বুঝানোর চেষ্টা করছি ইনশা আল্লাহ।

নিম্নোক্ত কারণে সন্তান মৃত ভূমিষ্ঠ হয় বা পেটেই সন্তান মারা যায়। প্রত্যেকটি মহিলার সন্তান গর্ভে আসার পরে এই বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। ধারাবাহিকভাবে কারণগুলো বর্ণনা করছি। 

১) মায়ের দুর্বল স্বাস্থ্যঃ

মৃত সন্তান জন্ম দেওয়ার অন্যতম কারণ মায়ের দুর্বল স্বাস্থ্য। একজন মায়ের সুস্বাস্থ্যই সুস্থ্য সন্তান জন্মদানের প্রধান চাবিকাঠি। মায়ের স্বাস্থ্য দুর্বল থাকলে সন্তান সঠিক পুষ্টিগুণ পায় না। যার ফলে গর্ভে বা ভূমিষ্ট হওয়ার পরপরই মৃত্যুবরণ করে সন্তান।

২) শারীরিক আঘাতঃ

গর্ভাবস্থায় মায়ের পেটে বা তার আশেপাশে কোন আঘাত লাগলে গর্ভে থাকা সন্তানের উপর প্রভাব পড়ে। এতে করে গর্ভেই সন্তান মারা যেতে পারে। আবার গর্ভে বাচ্চার নাড়ি ছিঁড়ে গেলেও বাচ্চা মারা যেতে পারে। তাই গর্ভধারণ করলে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে, যেন গর্ভবতী মা কোনভাবেই আঘাত না পায়।

৩) গর্ভাবস্থায় হাঁটাহাঁটি বা কাজ করায় অলসতাঃ

বর্তমানে লক্ষ্য করা যায়, গর্ভধারণের পরে গর্ভবতী মা কাজ করা কমিয়ে দেয় বা একেবারেই বন্ধ করে দেয়। যা নিজের আর সন্তানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি বিষয়। গর্ভধারণ করার পরে কাজ করা বন্ধ করে দিলে শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে না। পেটে পানির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং শরীর মোটা হয়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় গর্ভের সন্তানের।  গর্ভধারণ করলে মায়ের হাঁটাচলা স্বাভাবিক না রাখলে এবং ভারী কাজ ব্যতীত অন্যান্য কাজ না করলে বাচ্চার ক্ষতি বা মারা যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। পেটে বাচ্চা মারা গেলে বা ভূমিষ্ট বাচ্চা মৃত জন্মালে অনেক সময় খেয়াল করবেন বাচ্চার মুখ নীল হয়ে আছে। পেটে পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বাচ্চার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণে এমনটা হয়ে থাকে।

৪) বাবা-মা ও সন্তানের রক্তের গ্রুপঃ

মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ , বাবার রক্তের গ্রুপ পজেটিভ হলে এবং বাচ্চার রক্তের গ্রুপ পজেটিভ হয়ে থাকলে বাচ্চা পেটেই মারা যেতে পারে। সচরাচর দেখা যায় ভূমিষ্ট সন্তান মারা গেছে এমন সন্তানের বাবা-মা এবং সন্তানের রক্তের গ্রুপ এমন ছিল। এমন হলে জন্মানোর পরে ৭২ ঘন্টার মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব মা-কে ANTI RH-D টিকা নিতে হয়। না হলে পরবর্তী সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

৫) ভ্রূণ বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হলেঃ

ভ্রূণের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হলে সন্তান পেটেই মারা যায়। দুর্বলতার জন্য এবং সঠিক পুষ্টি না পেলে ভ্রূণ বৃদ্ধি পায় না এবং ভ্রুণ মারা যায়।

৬) গর্ভাবস্থায় নেশাজাত দ্রব্য গ্রহণ করলেঃ

গর্ভাবস্থায় নেশাজাত দ্রব্য, যেমন অ্যালকোহল, নিকোটিন অথবা কোন বিরূপ ঔষধ গ্রহণ করলে সন্তানের উপর প্রভাব পড়বে এমনকি সন্তান গর্ভেই মারা যেতে পারে। মনে রাখবেন, ধুমপান, নেশা জাতীয় সকল জিনিস নারীর বন্ধ্যাত্ব এবং সন্তানের বিকলাঙ্গ বা মৃত্যুর কারণ। আবার অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত খাবারও সন্তানের প্রাণনাশ করতে পারে। চা,কফি এনার্জি ড্রিংকে ক্যাফেইন থাকে।

৭) গর্ভাবস্থায় চিৎ বা উপুর হয়ে ঘুমালেঃ

গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর মা যদি চিৎ বা উপুর হয়ে ঘুমায় তাহলে বাচ্চা পেটে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ধুমাতে হবে কাত হয়ে বা পাশ হয়ে।

গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর ভুল ও সঠিক নিয়ম।

৮) থাইরয়েডঃ

মায়ের থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে অনেক সময় গর্ভে সন্তান মারা যায়। থাইরয়েড হরমোন বেড়ে গেলে গর্ভে ভ্রূণের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। ফলে ভ্রূণ গর্ভেই মারা যায়।

৯) মায়ের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হওয়াঃ

একজন নারীর বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে তার সন্তান ধারণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কমে যায়। তাই গর্ভবতী মায়ের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে পেটে সন্তান মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ২৩-২৮ এর মধ্যে গর্ভধারণ মায়ের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। ৩৫-৩৯ বছর এমন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ জনে ২ জন এবং ৪৫ বা তার অধিক বয়স এমন প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৫ জনের পেটে বা প্রসবের পরে বাচ্চা মারা যায় এমনটা লক্ষ্য করা যায়।

১০) অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিসঃ

মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস সন্তান গর্ভে মৃত্যুবরণ করার উল্লেখযোগ্য একটি কারণ। অনেক মা জানেনই না তার ডায়বেটিস আছে। ফলে ডায়বেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকে এবং সন্তান পেটেই মারা যেতে পারে।

১১) মায়ের উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেশারঃ

উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেশার পেটে সন্তান মারা যাওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত প্রেশারের ফলেও অনেক মা পর্যাপ্ত মেডিসিন খাচ্ছেন না। আবার কেউ মেডিসিন খেলেও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকছে না যার ফলে পেটেই সন্তান মারা যাচ্ছে।

১২) কিডনীর সমস্যাঃ

গর্ভবতী মায়ের কিডনী জনিত সমস্যা থাকলে গর্ভের সন্তান বা ভূমিষ্ট সন্তান মারা যেতে পারে। কিডনী জনিত সমস্যা বা ঔষধ সেবনের কারণে শরীরে বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে।

১৩) মায়ের হঠাৎ অসুস্থতাঃ

এমনটাও দেখা যায়, পেটে বাচ্চা থাকা অবস্থায় গর্ভবতী মা জ্বর, ডায়রিয়া এবং বমিতে আক্রান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত বমি হওয়ায় পেটে চাপ পড়ে সন্তানের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে। পপরবর্তীতে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হয়ে দেখা যায় বাচ্চাটি আর বেঁচে নেই। গর্ভাবস্থায় বাহিরের খাবার এবং অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব পরিহার করাই উত্তম। খেতে হবে ফলমূল, সবজি এবং পুষ্টিকর খাবার।

এসব কারণ ছাড়াও,

== জরায়ুর ত্রুটি, অস্বাভাবিক আকৃতি, টিউমার, উল্টো পজিশনে থাকা,

== ডিম্বাশয়ের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় থাকা,

== জরায়ু মুখ দুর্বল বা খুলে যাওয়া,

== জরায়ুর আকার অত্যন্ত ছোট থাকা, যেখানে বাচ্চা বড় হতে পারে না,

== মা, বোন বা ঘনিষ্ঠ স্বজনের মিসক্যারেজের জিনগত ইতিহাস,

== বিষাক্ত খাবার ও ঔষধ সেবন,

== একসাথে একাধিক বাচ্চা গর্ভধারণ,

== স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন ও মেদ থাকা গর্ভে সন্তান মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ।

কিভাবে বুঝবেন গর্ভেই সন্তান মারা গেছে কিনাঃ

বাচ্চা পেটে নড়াচাড়া কমিয়ে দিলেই বুঝে নিতে হবে কোন সমস্যা হচ্ছে। প্রথম দিনে সাধারণত বুঝা যায় না। খেয়াল করবেন আগে বাচ্চা দিনে ১০ বার নড়াচাড়া করলেও হঠাৎ তা কমে ৬ বার, তার পরদিন ৩ বার, পরে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তখনই বুঝে নিতে হবে বাচ্চার কিছু হয়েছে। প্রথম দিনে নড়চাড়া একটু কম বুঝতে পারলেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা নিলে বাচ্চাকে বাঁচানো সম্ভবনা বেড়ে যায়।

সন্তান গর্ভে মারা গেলে মায়ের চিকিৎসা কিঃ

২ দিনের বেশি গর্ভে সন্তানের নড়াচাড়া বন্ধ থাকলে ডাক্তার গর্ভবতী মায়ের কিছু পরীক্ষা করবেন। বাচ্চার হার্টবিট শুনে নিশ্চিত হবেন বাচ্চাটি বেঁচে আছে কি না। মাতৃগর্ভে বাচ্চা মারা গেলে তৎক্ষণাৎ কোন ক্ষতি হয় না। বাচ্চা মারা যাওয়ার ২ সপ্তাহ পর লেবার পেইন শুরু হয়। রোগী চাইলে ২ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে পারেন এবং স্বাভাবিকভাবে ভ্রূণটি বের হয়ে যেতে দিতে পারেন। কিন্তু ২ সপ্তাহ পর লেবার পেইন শুরু না হলে আর অপেক্ষা করবেন না। কেননা ২ সপ্তাহের বেশি বাচ্চাটি মায়ের গর্ভে থাকলে তা রক্তে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন আনতে পারে। এমনকি পেটে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দিতে পারে। যা মায়ের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রসব না হলে কৃত্রিম উপায়ে প্রসব করিয়ে বাচ্চা বের করে আনা হয়।

অনেকে মৃত বাচ্চা গর্ভে নিয়ে এত দিন থাকতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে না। সেক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়ে প্রসব করিয়ে ভ্রূণ বের করে আনা হয়। যদি মৃত বাচ্চাটি প্রথম সন্তান হয় তাহলে কোনভাবেই সিজারিয়ান পদ্ধতিতে বের করা হয় না। কিন্তু যদি মায়ের এর আগেও সিজার করা হয় এবং দ্বিতীয় বা অধিক বারের বাচ্চা গর্ভেই মারা যায় সেক্ষেত্রে সিজারের মাধ্যমে পেট থেকে মৃত বাচ্চাটি বের করা হয়। এ সময় মায়ের অনেক রক্তক্ষরণ হয়। এবং মা খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে আগে থেকে রক্তের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। একবার বাচ্চা গর্ভে মারা গেলে পরবর্তী বাচ্চাটির মারা যাওয়ার ঝুঁকি ২.৫%। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। ডাক্তার আগের সন্তান মারা যাওয়ার কারণ নির্ণয় করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।

নবজাতকের ক্ষতির কিছু কারণঃ

১. চোখে কাজলঃ

বাচ্চার যেন নজর না লাগে এজন্য অনেকেই বাচ্চার চোখে ও কপালে কাজল বা টিপ দিয়ে থাকে। এতে বাচ্চার নানা ধরনের অস্বস্তি হতে পারে। এলার্জি বের হতে পারে বা চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই এই কাজটি পরিহার করুন। নজর থেকে বাঁচাতে হলে ফজর ও মাগরিবের নামাজের পরে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক্ব সুরা নাস পড়ে বাচ্চার শরীরে ফুঁ দিবেন। পারতোপক্ষে দুপুরে, সন্ধ্যায় এবং রাতে বাচ্চাকে বাহিরে বের করবেন না।

২. মুখে মিষ্টিজাতীয় খাবারঃ

অনেকেই মনে করেন বাচ্চাকে মধু বা মিষ্টি খাওয়ালে বাচ্চার কথাও মধুর হবে। এই ধারণা একেবারেই ভুল। শিশু জন্মের পর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শালদুধ। চিন খাওয়ালে বাচ্চা জীবাণুতে সংক্রমিত হতে পারে। তবে মধু বা খেজুর চিবিয়ে বাচ্চার মুখে দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন হাদিসে এসেছে। তবে এমনটা করলে পরিমাণ যেন খুবই সামান্য হয় এবং একবারের বেশি না হয় লক্ষ্য রাখবেন। চিনি বা কেমিক্যাল জাতীয় খাবার একেবারেই অযোগ্য।

৩. ঘরে ধূপ বা ধোঁয়াঃ

অনেকেই নবজাতকের ঘরে ধূপ বা ধূনো জ্বালান। এই ধূপ কিন্তু বাচ্চার শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য রোগের কারণ হতে পারে।
এমনকি বাচ্চা দম আটকে মারা যেতেও পারে।

৪. আদরে সতর্কতাঃ

বাচ্চার ঘাড় শক্ত হতে তিন মাস সময় লাগে। কোলে নেওয়ার সময় তাই বাড়তি সতর্ক থাকুন। বাচ্চার মাথা যেনো ঝুলে না যায়। এতে বাচ্চার ঘাড় ভেঙে যেতে পারে।

৫. বালিশ-কুশনঃ

অজানা বিপত্তি এড়াতে ছোট বাচ্চার শোয়ার জায়গায় বালিশ কুশন না রাখা ভালো। এগুলো নরম, কিন্তু তারচেয়েও নরম নবজাতকের ত্বক। নড়াচড়া করতে গিয়ে আঘাত পেতে পারে। রাখলে বাচ্চার থেকে এতটা দূরে রাখুন যেন বাচ্চা স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে পারে।

৬. ঠোঁটে চোখে চুমুঃ

যেখানে সেখানে চুমু দিলে শিশু জীবানু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। নিতান্তই চুমু দিতে ইচ্ছে হলে বাচ্চার নরম পায়ের তালুতে চুমু দিন। বাহির থেকে এসে হাত মুখ না ধুয়ে বাচ্চাকে ধরবেন না। আপনার আমার জীবাণুর সাথে মোকাবেলার ক্ষমতা বেশি হলেও বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেটা নয়।

৭. পোষ্য প্রানীঃ

পোষ্যের সাথে বাচ্চাকে একা রাখা উচিত নয়। সদ্যজাত বাচ্চার গায়ের গন্ধ চিনতে দেরি হয় বাড়ির পোষা প্রানীটির। তাই ওদের দুজনকে কখনো একা ছাড়বেন না। বাচ্চাকে বাইরের কেউ ভেবে আঁচড়ে দিতে পারে পোষ্যটি।

নবজাতক সন্তান একটি পরিবারকে পরিপূর্ণ করে। মৃত সন্তান কোনভাবেই কাম্য নয়। সচেতনতাই পারে আপনার সন্তান এবং আপনাকে একটি সুন্দর জীবন দিতে। সচেতন হতে হবে আমাদের। নিজের যত্ন নিন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকল নিয়ম মেনে চলুন।

সুস্থ্য থাকুক প্রতিটি মা আর গর্ভের প্রতিটি সন্তান সুস্থ্য থেকে ভূমিষ্ট হোক নিরাপদে এটাই আমাদের চাওয়া।

আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় যে সকল খাবার বিপদজনক। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *