গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে ঘরোয়া চিকিৎসা।

গ্যাস্টিকের সমস্যা নেই এমন মানুষ হয়তো আমাদের দেশে খুঁজেই পাওয়া যাবে না। গ্যাস্টিকের সমস্যা মূলত ভাজাপোড়া খাবারের কারণেই বেশি হয়ে থাকে। অনেকের ভাজাপোড়া বা তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার পরে পেট ব্যথা বা বুকে ব্যথা কিংবা বদ হজম হয়ে থাকে।

শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলেই আমরা ঔষধ সেবনের দিকে ঝুঁকে পড়ি। অথচ এটা বুঝতে চাই না, অতিরিক্ত ঔষধ সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। এবং কিছু ঔষধ আমাদের অন্য রোগেও আক্রান্ত করতে পারে। অথচ এই সমস্যা দূর করার জন্য ঔষুধ না খেয়ে রাতে ঘুমানোর আগে বা সকালে খালি পেটে নির্দেশিত যেকোন একটি নিয়ম মানলেই দ্রুত নিরাময় পাওয়া সম্ভব। আমাদের আশেপাশে  অনেক প্রাকৃতিক জিনিস আছে। এসব জিনিস আমাদের শরীরের জন্য এবং রোগ থেকে মুক্তির জন্য ঔষধের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর। এগুলো খেলে বা ব্যবহারে শরীরে কোন ক্ষতি হয় না। এমনকি কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও দেখা দেয় না। এসব উপাদান হয়তো ঔষধের মত দ্রুত কাজ করে না। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদি সুস্থতার জন্য এসব উপাদান ঔষধের চেয়েও অধিক কার্যকরী। গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে এমন কি কি উপাদান আছে আসুন জেনে নেই আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে। 

 

১। আদাঃ

আধা ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা আদা নিন। তারপর সামান্য পরিমাণ লবণ মাখিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন। আদা খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে এক কাপ কুসুম গরম পানি পান করুন। দেখবেন গভীর রাতে আর গ্যস্ট্রিকের সমস্যা হবে না।

২। কাঁচা হলুদঃ

কাঁচা হলুদকে বলা হয়ে থাকে ‘ ন্যাচারাল এন্টিবায়োটিক ‘। একটি হাড়িতে এক গ্লাস পরিমাণ পানি নিয়ে চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। এর আগে এক ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা হলুদ পানিতে ছেড়ে দিন। অন্তত পাঁচ মিনিট কাঁচা হলুদ মিশ্রিত পানি ফুটতে দিন। তারপর নামিয়ে নিন। পানি ঠাণ্ডা হলে হলুদসহ পান করুন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় এটি খুব ভালো কাজ করে। হলুদ আস্ত বা কুচি করে কেটে অথবা বেটেও পানিতে দিতে পারেন।

৩। মধু মিশ্রিত পানিঃ

উপরের দুটো পদ্ধতি ঝামেলা বা কষ্টকর মনে হলে শুধুমাত্র এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করুন। কখনোই রাতে পেট বা বুক জ্বালা বা ব্যথা করবে না।

৪। কলাঃ

প্রতিদিন দিনে বা রাতে অন্তত ২টি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে করে গ্যাসট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে ।

৫) মধু ও কুসুম গরম পানিঃ 

উপরে যে প্রক্রিয়ার কথা বলেছিলাম সেটি ঠান্ডা পানিতে মধু মিশিয়ে পানের পদ্ধতি। প্রতিরাতে এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ মধু মশ্রিত পানি পানের অভ্যাস করুন। দেখবেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না আবার শরীরে অতিরিক্ত চর্বি থাকলে সেটিও দূর করে দিবে এই পানীয়।

৬) সেদ্ধ পেঁপেঃ

গ্যাস্ট্রিকের অতিরিক্ত সমস্যা হলে প্রতিদিন সকালে একটি পাত্রে ২ কাপ পরিমাণ পানি নিন। এরপর একটি কাঁচা পেঁপের অর্ধেক অংশ খোসা ছাড়িয়ে পানিতে সেদ্ধ করে নিন। অত:পর পেঁপে ও পানি ঠান্ডা হলে খেয়ে নিন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

 

বিঃদ্রঃ সকল ক্ষেত্রে ঔষধ পরিহার করা উচিত নয়। অতিরিক্ত সমস্যা হলে সমস্যা নিরাময়ের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ঔষধের কোর্স পূরণের পাশাপাশি এই ঘরোয়া চিকিৎসা নিতে থাকলে এক সময় ঔষধের প্রয়োজন হবে না বলে আস্বস্ত করতে পারি।

 

– Rumel Rahman 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *