“ঘুম থেকে উঠে প্রথমে চা বা কফি পান না করলে দিনটাই শুরু করবো” এমন মনোভাব বা অভ্যাস আমাদের মধ্যে অনেকেরই আছে। অনেকে মনে করেন খালি পেটে চা পান করলে শরীরের চর্বি ও ওজন কমে যায়। যারা এই ধারণায় বিশ্বাসী তাদের জানিয়ে রাখি এই অভ্যাসটি শরীরের জন্য বিন্দুমাত্র উপকারী নয়। বরং খালিপেটে চা বা কফি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি অভ্যাস। চা বা কফি নয়, এবন ৬ টি খাবার আছে যা খালিপেট খেলে আমাদের স্বাস্থ্য থাকবে সতেজ আর প্রফুল্ল।
আসুন জেনে নেই সকালে খালিপেটে কি কি খাবার আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
খেজুর/খোরমাঃ
খেজুর বা খোরমা সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালিপেটে খেলে অনেক বেশি উপকার পাবেন। খালিপেটে খেলে এর ভিতরে থাকা গ্লুকোজ, ক্যালসিয়াম পুরোটাই আপনার শরীরে কাজ করবে। তবে এই খাবার সারারাত পানি দিয়ে ভিজিয়ে না রেখে দুধের মধ্যে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। মনে রাখবেন খেজুর/খোরমা ১২-১৫ ঘন্টার বেশি ভিজিয়ে রাখা ঠিক নয়। বেশি সময় ভিজিয়ে এটি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিষাক্ত হয়ে যায়। খোরমা ও খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়া পেটের সমস্যা বিশেষ করে মাঝেমাঝেই ডায়ারিয়া বা বদহজম হয় এমন রোগীর রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে খেজুর খুব ভালো ঔষধের ভূমিকা পালন করে। রাসূল (সঃ) সকালে খেজুর/খোরমা ও দুধ দিয়ে সকালের নাস্তা করতেন বলে আমরা বিভিন্ন হাদিস থেকে জানতে পারি। অর্থাৎ, মুসলিনদের জন্য এই খাবারটি সুন্নতি খাবারও বটে। চাইলে খোরমা/খেজুর ও দুধে ভিজিয়ে না রেখে আলাদা আলাদা খেতে ও পান করতে পারেন।
> মধুঃ
হালকা গরম পানিতে লেবুর রস আর মধু খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে নতুনভাব্ব বলার কিছু নেই। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন তাদের জন্য এই পানীয় মহৌষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। নিয়মিত এই পানীয় পান করলে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয়। আর এর ফলে ওজন দ্রুত কমে যায়।তবে যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তাদের মধু এড়িয়ে চলাই ভালো।
বাদামঃ
অনেকেই বাদাম ও ড্রাই মিক্সড ফ্রুটস পছন্দ করেন। কিন্তু এসব খাবার শুকনো খাওয়ার চেয়ে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে খেলে বেশি উপকার পাবেন। কেননা ভিজিয়ে রাখা বাদামের পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। সারা রাত ভেজিয়ে রাখা কাঠবাদাম সকালে খালি পেটে খেলে হৃদরোগ , ডায়বেটিসের মতো সমস্যাও দূরে থাকবে। এই খাবারটিও পানির বদলে দুধে ভিজিয়ে রেখে খেলে পুষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়।
স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত তথ্য এবং রক্তদাতা খুঁজে পেতে ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করুন । রেজিষ্ট্রেশন লিংকঃ https://roktobondhon.com/registration
> আমলকীঃ
ভিটামিন-সি এর সহজ ও খুব ভালো উৎস এই আমলকি ফল। অনেকে এই ফলটি সেদ্ধ করে ভাতের সঙ্গে মাখিখে খেয়ে থাকে। কিন্তু আমলকি সেদ্ধ করলে এর পুষ্টিগুণ প্রায় সবটাই নষ্ট হয়ে যায়। সকালে খালি পেটে কাঁচা আমলকি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে চুল ও ত্বক ভালো থাকবে, পাশাপাশি হার্ট ও লিভার আরও কার্যকরী হয়ে উঠবে। বলা হয় প্রতিদিন খালিপেটে ১ টি আমলকি খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। শরীরের কোথাও কেটে গেলে বা অপারেশনের ক্ষত দ্রুত শুকিয়ে যেতে দারুণ কাজ করে আমলকি।
> পেঁপেঃ
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে আপনার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ফলটিতে ক্যালরিও অনেক কম। ফলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। আর পেঁপে খাদ্য বিপাক ও পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে। আবার খালিপেটে সেদ্ধ পেঁপে গ্যাস্টিককের সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তিতে খুব ভালো কাজ করে।
> জিরা পানিঃ
রাতে একগ্লাস পানিতে জিরা ভিজিয়ে রাখবেন। সকালে এই পানি ছেঁকে জিরা বাদে নিয়মিত খালি পেটে পানিটি পান করুন। আপনার থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে রোগটি দূর করে দিবে এই পানীয়। পাশাপাশি এই পানীয় হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও বেশ সহায়ক। আর হরোমন স্বাভাবিক থাকলে বিপাক প্রক্রিয়া ও হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এটা আমাদের সকলেরই জানা।
এসব খাবার ছাড়াও কলা এবং সেদ্ধ ডিম খাবার তালিকায় রাখতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় যে খাবারগুলো বিপদজনক।