ইমিউনিটি কমে গেছে কি না বুঝে নিন ৫টি লক্ষণে

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে ঘনঘন রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। সামান্যতেই আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেতেও অনেক সময় লেগে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে করোনার মতো শক্তিশালী ভাইরাসসহ যে কোন ভাইরাস সহজেই আমাদের কাবু করে ফেলতে পারে। সকলের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে। শরীরের এই প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বলা হয় ইমিউনিটি।

বাহির থেকে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকসহ নানা ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ যেন আমাদের শরীরের প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়েই লক্ষ্য রাখে ইমিউনিটি। বাহির থেকে কোন শত্রু (জীবাণু) শরীর প্রবেশ করতে চাইলে নিমিষেই প্রতিরোধ গড়ে তোলে এই ইমিউনিটি যোদ্ধারা।
এই সৈন্যদল যুদ্ধে জিতলে আপনি বা আমি রোগাক্রান্ত হব না। আর ইমিউনিটি যুদ্ধে ইমিউনিটি পরাজিত হলে অর্থাৎ জীবাণুর থেকে আমাদের ইমিউনিটি ক্ষমতা দুর্বল হলে আপনি বা আমি যে কোন রোগে সহজেই আক্রান্ত হয়ে যাবো। এ কারণেই শরীরে ইমিউটিনিটি স্বাভাবিক থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমাদের অজান্তেই আমাদের শরীরে সারাদিন হাজারও জীবাণু প্রবেশ করে । প্রত্যেকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেম সে সকল জীবাণুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে বলেই আমাদের রোগ হয় না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে ইমিউনিটির ক্ষমতা বেশি থাকলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে মাঝেমাঝে বা অল্পতে রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে। তবে যাদের ইমিউনিটি দূর্বল তাদের পড়তে হয় বিপাকে। যাদের ইমিউনিটি সিস্টেম কম তারা অল্পতেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে এবং প্রায়ই তাদের ভিতর অসুস্থ থাকার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
মনে রাখতে হবে সবার শরীরের ইমিউনিটি ব্যবস্থা এক নয়। শরীরে ইমিউনিটি স্বাভাবিক আছে নাকি কমেছে, এ বিষয়টি অনেকেই বুঝতে পারে না।

মাত্র ৫টি লক্ষণেই জানতে পারবেন শরীরের ইমিউনিটি কমে গেছে কি না। আসুন তবে জেনে নেই কি কি সেই লক্ষণ-
১. বছরে ২-৩ বার সর্দি-কাশিতে ভোগাটা স্বাভাবিক। মৌসুমী ফ্লুতে বছরের যেকোন সময় যে কোন ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তবে এক মাস কিংবা দুই-তিন মাস অন্তর অন্তর এ সমস্যা লেগে থাকলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে।
এমনটা হলে বুঝতে হবে, আপনার ইমিউনিটি সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করছে না। আর এ কারণেই আপনি বারবার সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে এবং ইমিউনিটি বাড়াতে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে প্রতিদিন।
২. পেটের সমস্যায় ভোগাটা শরীরের ভালো লক্ষণ নয়। পেটের রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া দেহের ইমিউনিটি কমে যাওয়ার বিশেষ একটি উপসর্গ। বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, শরীরে যথেষ্ট ইমিউনিটি থাকলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায় । তবে বারবার পেট খারাপ হওয়ার সমস্যা দেখা দিলে বুঝে নিতে হবে ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য ঘনঘন পেটের সমস্যায় ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে আপনার ইমিউনিটির বিষয়ে।

রক্তদাতার সন্ধান পেতে এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট পেতে নিচের লিংকে রেজিষ্ট্রেশন করুনঃ
https://roktobondhon.com/registration/                                                                                      ৩. শরীরের কোথাও কেটে গেলে যদি সেই স্থানের ঘা শুকাতে দেরি হয়, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা কমে গেছে । কারণ ইমিউনিটি ঠিক থাকলে ঘা বা কাটা স্থান দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। আর ইমিউনিটি কম থাকলে সেই ঘা শুকাতে অনেকটা সময় লাগে যায়। ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলেও ঘা শুকাতে অনেক সময় লাগে। আর ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর ইমিউনিটি এমনিতেই কমতে থাকে।
৪. জানলে অবাক হয়ে যাবেন মস্তিষ্কের সঙ্গেও ইমিউনিটির দারুণ সংযোগ বা সম্পর্ক আছে। দুশ্চিন্তা করার সময় আমাদের শরীরে কিছু খারাপ হরমোন নির্গত হতে থাকে। আর এই হরমোন নির্গত হওয়ার ফলে এটি ইমিউনিটির উপর বিশেষ আর বিরুপ প্রভাব ফেলে। এ কারণে ইমিউনিটি কমে যেতে থাকে। সুতরাং, দুশ্চিন্তা কমিয়ে দিয়ে নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে।
৫. কর্মব্যস্ত দিনে হঠাৎ করেই শরীর ক্লান্ত লাগা স্বাভাবিক। তবে প্রতিদিন যদি ক্লান্তিতে ভোগেন তাহলে জেনে নিন এটি মোটেও ভালো লক্ষণ না। কারণ ইমিউনিটি কমে যাওয়ার প্রভাবে এমন দুর্বলতা মানুষের দেহে ফুটে ওঠে। ক্লান্তি কিন্তু শারীরিক সমস্যারই ইঙ্গিত দেয়।
সতর্ক থাকুন। উপরের যে কোন লক্ষণ আপনার মাঝে দেখা দিলে ইমিউনিটি বাড়াতে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হোন। এবং নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার ও শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখুন। মনে রাখবেন, ইমিউনিটি অত্যধিক কমে গেলে বড় অসুখ বা মহামারি আপনার মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুন: যে খাবার আপনাকে বৃদ্ধ হতে দিবে না। 

1 thought on “ইমিউনিটি কমে গেছে কি না বুঝে নিন ৫টি লক্ষণে”

  1. Pingback: জ্বর ঠোসা.. স্বাভাবিক ভাবলেও অন্ধত্বের অন্যতম কারণ, ঘটায় মৃত্যুও - রক্ত বন্ধন - Rokto Bondhon

Leave a Comment